মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া ছোট্ট শিশু ফারজানের রক্তশূন্যতার কারণে তাৎক্ষণিক অপারেশন করতে পারছিলেন না রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঠিক তখনই যেন ‘রক্তে মোরা বাঁধন গড়ি, রক্ত দিবো জীবন ভরি’ স্লোগানে শপথ নিয়ে চার বছরের শিশু ফারজানের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এলো হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশের দুই সদস্য।
জ্ঞান ফিরেছে সৎ মায়ের ছুরিতে গলার ৬ ইঞ্চি কেটে যাওয়া শিশু ফারজানের। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে শয্যায় ফারজানের শরীর যখন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছিল। ঠিক তখনই রক্ত নিয়ে এগিয়ে এলেন পুলিশের দুই সদস্য। এরপরই কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শিশুটির কেটে যাওয়া গলার সফল অস্ত্রপ্রচার।
রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে রাঙামাটি শহরের কোতোয়ালি থানাধীন কোর্ট বিল্ডিংস্থ সোনালীবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সেখানে শিশুটির জীবন বাঁচাতে দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে রক্তের প্রয়োজন পড়ে। তখন এগিয়ে আসেন রাঙামাটি জেলা পুলিশের দুই সদস্য কনস্টেবল মো. শাকিল ও কনস্টেবল আল মাসুদ রাজু। শিশুটির জীবন রক্ষায় দুই ব্যাগ রক্ত দেন তারা।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শওকত আকবর খান জানিয়েছেন, শিশুটিকে হাসপাতালে আনার পথেই প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাই হাসপাতাল আনার পর সে অনেকটা নিস্তেজ হয়ে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমরা তাড়াতাড়ি রক্ত খুঁজতে বললাম স্বজনদের। হাতে সময় বেশি ছিলোনা দেখে আমরা উৎকন্ঠায় ছিলাম।
বিষয়টি বুঝতে পেরে এবং ঘটনার আকস্মিকতায় আমাদের এখানে দায়িত্ব পালন করা দুইজন পুলিশ সদস্য এগিয়ে এসে জানালেন তাদের রক্তের গ্রুপ এ পজেটিভ এবং তারা রক্ত দিবেন। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা রক্ত সংগ্রহ করে শিশুটির শরীরে দিই। সাথে সাথে বেশ বড় আকারের কাটা অংশটি সেলাই করতে থাকি। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিশুটির অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। পরবতীতে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আমরা তাকে চট্টগ্রাম রেফার করেছি।
উল্লেখ্য, রোববার (১২ জানুয়ারি) রাঙামাটি শহরে ৪ বছর বয়সী শিশু ফারজানকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল সৎ মা। এরপর গলায় প্রায় ৬ ইঞ্চির মতো কেটে যাওয়া ক্ষত নিয়েই শিশুটিকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
এএ/এসএইচ