শাটল ট্রেনে পিতৃহারা মেয়েটি পেতে পারে ভর্তির সুযোগ, ভাই পাবে চাকরি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এসে শাটল ট্রেনেই বাবার মৃত্যুর ঘটনা আলোড়ন তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে বাবাকে হারালেও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ‘সি ইউনিটের’ ভর্তি পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত উত্তীর্ণ হতে পারেননি তিন্নি দাশ। তবু তার প্রতি সহানুভূতিশীল অনেকেই। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলেও তিন্নির পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে তিন্নির ভাই সানীকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) ‘সি ইউনিটের’ ভর্তি পরীক্ষার দিনে চবি ক্যাম্পাস থেকে শহরে ফেরার পথে শাটল ট্রেনেই মারা যান ভর্তিচ্ছু তিন্নি দাশের বাবা মৃণাল দাশ। তিনি সাতকানিয়ার আমিলাইশ ইউনিয়নের বাসিন্দা।

এদিকে তিন্নিকে বিশেষ বিবেচনায় ভর্তির সুপারিশ করেছেন ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। যাতে প্রাথমিকভাবে সম্মতি দিয়েছেন অনুষদের ডিনও।

ড. মোহাম্মদ শামীম জানান, ‘মেয়েটার হয়তো চান্স হয়নি। তবে আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করছি। আমরা তিন্নিকে শর্তহীনভাবে ভর্তি করানোর চেষ্টা করছি।’

অধ্যাপক শামীম বলেন, ‘ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আমি উত্থাপন করেছি; যদিও তা চূড়ান্ত হয়নি। প্রাথমিকভাবে অনুষদের ডিন ও সকল বিভাগের চেয়ারম্যানরা রাজি হয়েছেন। যেহেতু এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ বডিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ওই ছাত্রীটিকে ভর্তি করাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি অনুরোধ জানাই।’

ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার এসএম আকবর জানান, ‘এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও তাকে কিছু জানানো হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’

এদিকে ওই ছাত্রীর ভর্তির বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্তে চবি শিক্ষার্থীদের অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে বাবা হারানো তিন্নি দাশের ভাইকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরি দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিন্নির ভাই সানী দাশ।

সানী দাশ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে মেয়র সাহেব আমার মায়ের সাথে কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছেন। এ সময় আমার যোগ্যতা অনুযায়ী একটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন বলে আমার মাকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।’

এর আগে শুক্রবার রাত নয়টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু চট্টগ্রাম নগরীর সিআরবি এলাকার গোয়ালপাড়ায় তিন্নির বাসায় ছুটে যান। সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর মোবাইল থেকে এ সময় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন তিন্নির মায়ের সাথে কথা বলেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!