করোনা আক্রান্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিনকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে তাঁর সন্তান সালেহীন তানভীর গাজী ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৩০ জুলাই তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার গুলশানের শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেওয়া সালেহীন তানভীর গাজী’র পোস্টে উল্লেখ রয়েছে, ‘আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২১। বাবা দুইদিন ধরে নন-ইনভেসিভ লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সেটি খুব একটা কাজ করছেনা বিধায় সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে ইনভেসিভ লাইফ সাপোর্ট কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে।’
অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ায় তাঁকে গত ৩১ জুলাই থেকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। গত ২১ জুলাই থেকে তিনি করোনার উপসর্গে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন সালেহিন তানভীর গাজী। পরে করোনার নমুনা পরীক্ষায় তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন।
এর আগে ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসাপাতাল নির্মানের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি অনেক লোকজনের সংষ্পর্শে এসেছিলেন। এর পরদিন থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে সিআরবির ওই সমাবেশ থেকে তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
সালেহিন তানভীর গাজী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেছিলেন, ‘গুলশানের শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উনাকে ভর্তি করা হয়েছে। সকালের দিকে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ায় উনাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।’
কবে থেকে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে তো কিছুদিন সময় লেগেছে। তবে উনার উপসর্গ দেখা দেয় কোরবানির দিন থেকে (২১ জুলাই)। এর আগে তিনি সিআরবিতে বক্তৃতা করেছেন। সেখানে অনেক বেশি মানুষের সংষ্পর্শে এসেছেন। আমার ধারনা সেখান থেকেই হয়েছেন। তবে এটা যেকোন ভাবেই হতে পারে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি সিআরবির হাসপাতাল নিয়ে নিজের মত করে এলোমেলোভাবে বিভিন্ন কথা বলছেন। এটা নিয়ে বেশ কনসার্ন উনি।’
অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চট্টগ্রামের প্রগতিশীল বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ক্ষেত্রে তার লেখা বইয়ের তথ্যকে দালিলিক সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল। এছাড়াও ১/১১ এর সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর এর প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবু ইউসুফের সাথে তাকেও পতেঙ্গা র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে অপদস্ত করা হয়েছিল।
এমএফও