রোহিত-রাহুলের জোড়া শতকে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে লিগ পর্বের অষ্টম জয় তুলে নিয়েছে ভারত। নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে আপাতত টেবিলের শীর্ষে ভারত। এই জয়ে সেমিতে ইংল্যান্ডকে এড়ানোর চেষ্টায় নিজেদের কাজটা করে রাখল কোহলির দল। তবে আরও কয়েকঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে চূড়ান্ত প্রতিপক্ষ কে সেটা জানার জন্য।
চার দলের সেমি নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। তবে কে কার প্রতিপক্ষ সেটা ঠিক হয়নি। তিনে ইংল্যান্ড ও চারে নিউজিল্যান্ডের জায়গা পাকা। লড়াই শীর্ষ আসন নিয়ে। সেখানে আপাতত এক নম্বরে ভারত। দিনের আরেক ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়ছে অস্ট্রেলিয়া।
সেখানে যদি অস্ট্রেলিয়া জিতে যায়, তবে ফিঞ্চের দলই থাকবে শীর্ষে। সেক্ষেত্রে ফরম্যাট অনুযায়ী টেবিলের এক ও চার নম্বর দল লড়বে সেমিতে। তাতে অজিরা পাবে কিউইদের। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া প্রোটিয়া ম্যাচে হেরে গেলে থাকবে দুইয়ে, তখন তিনে থাকা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নামতে হবে সেমিতে। আর ভারত সেরা চারে পাবে নিউজিল্যান্ডকে। নিজেদের জয়ে আপাতত সেই পথটা করে রাখল কোহলির দল। বাকি হিসাব ঠিক হবে অজি-প্রোটিয়া ম্যাচের ফলের পর।
হাতে আরও একটা ম্যাচ আছে নিশ্চিতভাবেই। সেমির ম্যাচ। কিন্তু রোহিত শর্মা সে পর্যন্ত অপেক্ষায় গেলেন না। রেকর্ড করতে শ্রীলঙ্কাকেই বেছে নিলেন ভারত ওপেনার। বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ পাঁচ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন। তার সঙ্গে যোগ হল লোকেশ রাহুলের সেঞ্চুরি। জোড়া শতকে সহজ জয় তুলেছে ভারত।
হেডিংলিতে প্রথমে ব্যাট করে ২৬৪ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। দুই ভারতীয় ওপেনারের দাপটে শেষ পর্যন্ত তা হালে পানি পায়নি। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়লেন রোহিত, বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেলেন রাহুল। তাতে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে ৩৯ বল হাতে রেখেই ২৬৫ রান তুলে ফেলেছে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
ওপেনিং জুটিতেই ১৮৯ রান তুলেছেন রোহিত-রাহুল। ৯২ বলে সেঞ্চুরি তুলে রোহিত থেমেছেন ১০৩ করে। ১৪ চার ও ২ ছক্কার ইনিংস। তাতেই যা হওয়ার হয়ে গেছে। ভেঙে ফেলেছেন এক আসরে কুমার সাঙ্গাকারার সর্বোচ্চ চার সেঞ্চুরির রেকর্ড। ভারতীয় ওপেনারের এই বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি সংখ্যা এখন পাঁচ।
শুধু কী তাই! এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেন রোহিত। এর আগে ওয়ানডে এই কীর্তি আছে কেবল নয় ব্যাটসম্যানের। সেমিতে সেঞ্চুরি পেলে ২০১৫ বিশ্বকাপে সাঙ্গাকারার টানা চার ম্যাচে সেঞ্চুরির রেকর্ডেও ভাগ বসাবেন।
রোহিতকে হাতছানি দিচ্ছে স্বদেশী শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ডও। ২০০৩ আসরে শচীনের ৬৭৩ রান এখন পর্যন্ত এক আসরে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ৬৫৯ রান নিয়ে দুইয়ে অজিদের সাবেক ওপেনার ম্যাথু হেইডেন। কাসুন রঞ্জিতার বলে আউট হওয়ার সময় রোহিতের পাশে রান মোট ৬৪৭, যা এই আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তবে এক আসরে সর্বোচ্চ সংগ্রাহকের তালিকায় তিনি এখন তিনে। এই আসরেই ৬০৬ রান করা সাকিব আল হাসান এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সংগ্রাহকের তালিকায় নেমে গেছেন চারে।
রোহিতকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম ও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন রাহুল। ম্যাচ শেষ করার একদম অন্তিম মূহুর্তে এসে লাসিথ মালিঙ্গার স্লো বাউন্সারে থেমেছেন ১১৮ বলে ১১ চারের সঙ্গে এক ছয়ে ১১১ করে। আর কোহলি অপরাজিত ৩৪ রানে ম্যাচ শেষ করে এসেছেন।
রোহিত-রাহুলের দাপটে চাপা পড়ে গেছে লাসিথ মালিঙ্গার অন্তিম বিশ্বকাপ মুহূর্তটাও। নিজের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচে ৭২ রানে মাত্র ১ উইকেট নিয়েছেন লঙ্কান এ পেসার।
আগে প্রথমে ব্যাট করে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের সেঞ্চুরিতে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে শ্রীলঙ্কা। ৩ উইকেট নিয়ে এ ম্যাচেই উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন জাসপ্রীত বুমরাহ। রোহিতের রেকর্ডে অবশ্য সবকিছু শেষ পর্যন্ত আড়ালেই পড়ে গেছে।