রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এবারও হয়নি প্রত্যাবাসন

রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এবারও হয়নি প্রত্যাবাসন। সব রকমের প্রস্তুতি ছিল বাংলাদেশের। প্রত্যাবাসনকে ঘিরে টেকনাফের নয়াপাড়া থেকে দক্ষিণের শালবাগান এবং জাদিমুরা এলাকা থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ঘুমধুম পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। তবুও শেষ পর্যন্ত ঘোষণা এলো, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি হননি।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেছেন , আজও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হচ্ছে না। যারা স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি হবেন শুধু তাদেরকেই ফেরত পাঠানো হবে। জোর করে কাউকে পাঠানো হবে না।

প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার ও মতামত গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
প্রত্যাবাসনবিরোধী চক্রের অপতৎপরতার কারণে এবারও শেষ পর্যন্ত হলো না। মিয়ানমারের আন্তরিক সদিচ্ছার অভাব এবং কিছু বিদেশি এনজিওর প্রত্যাবাসনবিরোধী তৎপরতার কারণে গত বছরের ১৫ নভেম্বর প্রথম দফার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আটকে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এবারও কিছু রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে নানা শর্তের কথা বলছে। শর্তের মধ্যে নাগরিকত্ব প্রদান, ভিটে-বাড়ি ও জমি-জমা ফেরত, আকিয়াব জেলায় আশ্রয় শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের নিজ বাড়িতে ফেরত, কারাগারে বন্দি রোহিঙ্গাদের মুক্তি, হত্যা, ধর্ষণের বিচার, অবাধ চলাফেরা, নিরাপত্তা প্রদান।

প্রত্যাবাসনের তালিকায় থাকা ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার মধ্যে গত মঙ্গলবার ও বুধবার ২৩৫ রোহিঙ্গা পরিবারের মত যাচাই করেছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়। এর মধ্যে মঙ্গলবার ২১ পরিবারের এবং বুধবার ২১৪ পরিবারের মত যাচাই করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবসন কমিশনার মো. আবুল কালাম।

টেকনাফের নাফনদী সংলগ্ন কেরুনতলী ঘাট ও ঘুমধুম সীমান্তের ট্রানজিট ক্যাম্প ঘুরে ব্যাপক প্রস্তুতি চোখে পড়ে। কেরুনতলী ট্রানজিট ক্যাম্পে ১১টি টিন শেড ব্যারাক রয়েছে। ওইসব ব্যারাকের প্রত্যেকটিতে তিনটি করে মোট ৩৩টি ঘর নির্মাণ করা আছে। অপরদিকে উখিয়ার কুতুপালং টিভি রিলে কেন্দ্রের বিপরীতে ঘুমধুমে নির্মিত অপর ট্রানজিট ক্যাম্পও প্রস্তুত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছরের ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি হয়।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!