রোগীর ওষুধ নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে অবাক জোচ্চুরি, অর্ডার খাতার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই
নার্সদের সঙ্গে ওষুধ চুরিতে ওয়ার্ডবয়-আয়ার চক্র
ইয়াছিন চৌধুরী ডেঙ্গু-পরবর্তী টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। ওয়ার্ডে ভর্তির পর বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে ওষুধ-ইনজেকশন। মেডিকেল থেকে ওষুধ সরবরাহের কথা থাকলেও তা তিনি পাননি। এমনকি ‘মেরোপেনেম’ ১ গ্রামের দামি ইনজেকশনটিও তাকে বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। অথচ ওয়ার্ডের অর্ডার খাতায় রোগীকে ‘মেরোপেনেম’ ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে বলে লিপিবদ্ধ করা হয়।

আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা রেশমী আক্তার ভর্তি আছেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর বেডে। ১৫ দিনের বেশি তার জ্বর ছিল। গত বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তার জ্বর কমেছে। তারপরও অবজারভেশনের জন্য তাকে রাখা হয়। রেশমীর ভাই এনামুল জানান, তার বোনের জন্য সব ধরনের ওষুধ ও ইনজেকশন তিনি বাইরের দোকান থেকে কিনে এনেছেন। হাসপাতাল থেকে পেয়েছেন শুধুমাত্র গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। রেশমীর সঙ্গেও ঘটেছে একই ঘটনা। তাকেও ‘মেরোপেনেম’ দেওয়া হয়নি মেডিকেল থেকে। কিন্তু অর্ডার খাতায় ‘দেওয়া হয়েছে’ উল্লেখ করে।
এভাবে দিনের পর দিন রোগীদের সঙ্গে অভিনব প্রতারণা করে আসছে চট্টগ্রাম মেডিকেলের কিছু অসাধু ডাক্তার-নার্স-ওয়ার্ডবয়। প্রতিদিনের ওয়ার্ডের অর্ডার খাতায় পর্যাপ্ত ওষুধ রোগীদের দেওয়া হয় বলে লিপিবদ্ধ করা হলেও মূলত সেসব ওষুধ চুরি করে বেচে দেন তারা। একইসঙ্গে রোগীর স্বজনদের দিয়ে ওষুধ আনেন বাইরের দোকানগুলো থেকে। এতে রোগীর স্বজনদের যেমন চড়া দামে ওষুধ কিনতে হচ্ছে, তেমনি এসব অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দু’নম্বরি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে—ডিউটি শেষে মজুদ করা ওষুধ হাতব্যাগে করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সিনিয়র স্টাফ নার্সরা ওয়ার্ডের আয়া, ওয়ার্ডবয়কে দিয়ে ছুটির সময় ওষুধের ব্যাগ নিচে নামায়। তাদের হাতে যেহেতু ওষুধের ব্যাগ থাকে না, তাই সন্দেহ করার সুযোগ নেই। মূলত ওয়ার্ডে নার্স ও ওয়ার্ডবয়-আয়াদের চেকিংয়ের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তারা সহজেই ওষুধ চুরি করে নিয়ে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিনই পর্যাপ্ত ওষুধ দেওয়া হয়। এসব ওষুধ অর্ডার খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর রোগীর রোগের ধরন অনুযায়ী দেওয়া হয় ওষুধ। মেডিকেলের স্টোর থেকে আসা এসব ওষুধ রিসিভ করেন নার্স ইনচার্জ। এরপর তিনি তদারকি করে ওষুধ রোগীর কাছে পৌঁছান। এর আগে রোগীর রোগের ভিত্তিতে ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিনের চাহিদাপত্র পাঠানো হয় মেডিসিন স্টোরে। এছাড়া স্টোর থেকে কি কি ওষুধ মজুদ আছে তার একটি লিস্টও মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো হয়।
দামি ওষুধগুলোর যখন সরকারি সাপ্লাই থাকে, তখন বেশি চাহিদা দিয়ে নার্সরা সেসব ওষুধ ওয়ার্ডে নিয়ে আসেন। ওই সময় রোগীদের ওষুধ না দিয়েই তা অর্ডার খাতায় লিখে রাখেন। আর রোগীর স্বজনদের বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনে আনতে লিস্ট ধরিয়ে দেন।
অথচ চট্টগ্রাম মেডিকেলে ২০২৪-২৫ অ্থবছরে ৫৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে শুধুমাত্র রোগীদের ওষুধের জন্য।
মেডিসিন স্টোর সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের সময় ও ৫ আগস্টের পরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ওষুধ সরবরাহ কম ছিল। কিন্তু মাসখানেক আগে থেকে সংকট কেটে গেছে। এখন পর্যাপ্ত ওষুধ যোগান হয়েছে হাসপাতালে। আর এ সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন হাসপাতালের কিছু অসাধু ডাক্তার-নার্স-ওয়ার্ডবয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) যেসব ওষুধ স্টোর থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরবরাহ করা হয়েছে, তার একটি তালিকা চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে এসেছে। তালিকায় অনুযায়ী সরবরাহ করা ওষুধগুলো হলো—
ক্যাপসুল : Doxycycline, Cefradine-500mg, Cefixime-200mg, Flucloxacillin-500mg, Indomethacin-25mg, Omeprazole-20mg, Tetracycline-250mg, Fluconazole-50mg.
ট্যাবলেট : Aspirin-75mg (Ecosprin), Azithromycin-500mg, Amlodipine-5mg B-complex, 73/V Metronidaz 22 Bisoprolol-2.5mg (Tenobis), Barbit, ciprofloxacin-500mg, cyclid (procyclidine) 5mg, Cetrizine-10mg, Clopidogrel (dogrel-75mg), clopidogrel+aspirin (dogrel plus), calcium-300 mg/500mg, Domperidon-10mg, doxophyllin (doxoma)-200mg, Etorac-10mg, Ferrous sulphate+folic acid, Frusemide, frusemide, frusemide+sprionolactone, folision, fexofenadine, gliclazide-80mg, halop, inflame -400mg ,levofloxacin-500mg, losarten potassium, normens, metronidazole, mtx-2.5 mg, vidapin-50mg, nidocard-2.6, paracetamol-500mg.
ইনজেকশন : Atropine, anti snake venom -10ml, ceftriaxone-1gm, ceftrazidim-1gm, cefradine-500mg, cholera saline-500/1000cc, cefuroxime-750mg, dexamethasone-1ml, dns-500/1000cc, dialysis fluid a, Bepirubicin-50mg, Etorac-30mg, Frusemide, fentanyl citrate, Gentamycin-80mg/20mg, 1.5% Glycin irrigation -1000cc, Heparin-25000 unit, Haloperidol, Hydrocortison (cotson) 100mg, 2% lignocaine -50cc, 2% lignocaine +adrenalin, megsulph, manitol, menoperanam 1gr, normal saline 1000cc, omeprazole -40mg, ondansetron (emistat), Pethidine 100mg, plasmasol -10000cc, procyclidine/extranil-10m, Triamecolone-40mg, xylistin 150mg.
সিরাপ, ড্রপ, ওয়েন্টমেন্ট, লোশন : Aziithromycin-30ml, cefixime-60mg, Cetrizine, amoxiciline+clavulanic acid, paracetamol 60ml, zinc sulphate, barbit, iracet, bb lotion, mexiderm f, 0.05 rynaex nosal drop, neotracin oint, xylocaine jelly.
চট্টগ্রাম মেডিকেলের ১৬ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রতিদিন চিকিৎসাধীন রোগী থাকে ১৪০ থেকে ১৫০ জন। শনি, রোব ও বুধবার রোগী ভর্তির দিনগুলোতে তা ২০০ জনও ছাড়িয়ে যায়।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওষুধের চাহিদাপত্রে দেখা গেছে, ২৪ ডিসেম্বর ওয়ার্ড থেকে ৮০টি মেরোপেনেম ইনজেকশনের চাহিদা দেওয়া হয়। কিন্তু আগেরদিন এ চাহিদা ছিল ৪০টি। ২৬ ডিসেম্বর এই ইনজেকশন পুনরায় স্টোর থেকে ওয়ার্ডের চাহিদাপত্র অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়েছে। এই ইনজেকশন মেডিকেলে সরবরাহ পর্যাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওয়ার্ড থেকে নার্সরা অতিরিক্ত চাহিদা দিয়ে তা নিয়ে আসেন।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নার্সরা ভেতরে থাকা স্টোরে এই ইনজেকশন অতিরিক্ত মজুদ করে রাখার কথা স্বীকার করেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেলের আশপাশের বিভিন্ন ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, মেরোপেনেম ১ গ্রাম ইনজেকশনের দাম দোকানভেদে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স দীপ্ত রানী দেবী বলেন, ‘আমি মেরোপেনেমসহ দামি ইনজেকশন, ট্যাবলেট অতিরিক্ত চাহিদা দিয়ে এনে মজুদ করে রেখেছি। যখন এসব ওষুধের সরকারি সাপ্লাই থাকে না, তখন আমি এসব ইনজেকশন রোগীদের দিতে পারি। আজও (মঙ্গলবার) রোগীদের দিয়েছে মেরোপেনেম ইনজেকশন। আর দেওয়ার তথ্য অর্ডার খাতায় তুলে রেখেছেন কর্তব্যরত নার্সরা।’
কিন্তু ২৪ ডিসেম্বর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ডার খাতায় যেসব বেডের রোগীদের ওষুধ সরবরাহের তথ্য লিপিবদ্ধ রয়েছে, সেটির সঙ্গে বাস্তবতায় বিস্তর ফারাক। মেরোপেনেম ইনজেকশন ওয়ার্ডের ১২, ২৩, ১৯, ৪/এ, ৫৪, ৭ /এ, ১৮বি বেডের রোগীদের সরবরাহের তথ্য লিপিবদ্ধ রয়েছে অর্ডার খাতায়। কিন্তু এসব সিটের রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের নার্সরা সেসব ইনজেকশন দিয়েছেন, তবে তা বাইরের দোকান থেকে কিনে আনার পর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিকাংশ রোগী ও রোগীর স্বজনরা জানান, নার্সরা তাদের বলেন, ডাক্তারদের লিখে দেওয়া ইনজেকশনগুলো দামি, এসব হাসপাতাল থেকে সরবরাহ নেই। নিচের দোকান থেকে কিনে আনতে হবে। এরপর বাইরে থেকে ইনজেকশন ও বাড়তি ওষুধ কিনে এনে নার্সদের হাতে দেন তারা।
সেফট্রোন ইনজেকশন বাইরের ওষুধের দোকানে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সরবরাহের তথ্যে ১৫, ১, ২২, ২৫/এ, ০৪, ০৫, ১৬, ৮০, ৩০, ৩০/এ, ৪/এ, ৩৩, ৩৫ নম্বর বেডের রোগীদের এ ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু এসব বেডের রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কেউ এসব ইনজেকশন পাননি। ডাক্তার যেসব ওষুধ কিনে দিয়েছেন, সব মেডিকেলের নিচে ও বাইরের দোকান থেকে কিনে এনেছেন স্বজনরা।
এছাড়া রোগীদের ডোকোপা দেওয়ার তথ্যে ১২, ১৩, ২৩বি, ২২, ৬৫বি, ৫৬(এ), ৫৫, ৫৫(এ), ৩৭, ৩৭বি বেডের রোগীদের দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এসব বেডের রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুধুমাত্র নরমাল স্যালাইন, প্যারাসিটামল আর গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়েছেন নার্সরা। অন্যান্য ওষুধ তাদের স্বজনরা কিনে এনেছেন বাইরের দোকান থেকে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ডার খাতায় ২৪ ডিসেম্বর ইকোস্প্রিন ৭৫ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট দেওয়ার তথ্যে ২২, ২৬, ৩০ (এ), ৪৪, ৩৫, ৩৬ বেডের রোগীদের দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এসব বেডের একাধিক রোগী ওষুধটি না পাওয়ার কথা জানান। তারাও ইকোস্প্রিন বাইরের দোকান থেকে কিনে এনে দিয়েছেন।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রোগী জসীম উদ্দিনের ছেলে রোহান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার বাবার শ্বাসকষ্ট। সপ্তাহ খানেকের বেশি সময় ধরে ভর্তি। ১২ দিনে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকার ওষুধ ও ইনজেকশন কিনতে হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গেছে আরও হাজার পাঁচেক টাকা। ডাক্তার স্লিপ লিখে দিলে তা নার্সকে দেখাতেই বলেন, সরকারি সাপ্লাই নেই। বাইরের দোকান থেকে কিনে আনুন।
একই অবস্থা ১৩ ও ১৪ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডের। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন নুসরাতের ভাই নওরোজ বলেন, ‘আমার বোনের টাইফয়েড হয়েছিল। টাইফয়েডের প্রতিটি ইনজেকশন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। হাসপাতাল থেকে কোনো ইনজেকশন দেওয়া হয়নি।’
৯ নম্বর শিশু রোগ ওয়ার্ডেও এর ব্যতিক্রম নেই। এখানেও অর্ডার খাতায় ওষুধ সরবরাহের তথ্য দেখিয়ে প্রতিদিনই চলছে চুরি। ওয়ার্ডে ৬৪ সিট থাকলেও ২৬ ডিসেম্বর রোগী ভর্তি ছিল ২০৮ জন। ওইদিনের অর্ডার খাতায় ceftriaxon ইনজেকশন ২, ৩, ৪এ, ৫, ১১, ১৪, ২২এ, ২৪, ২৫, ২৬, ২৬এ, ২৭, ২৮, ৩০, ৩৩এ, ৩৪, ৩৭, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪৯, ৪৫, ৮৫এ, ৫৬, ৪৭, ৪৭এ, ৪৮এ, ৪৯, ৪৯এ নম্বর বেডের রোগীদের দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এসব রোগীদের মধ্যে ৫ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ভিন্ন তথ্য।
৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগী সৌরভের বাবা সুব্রত জানান, তার ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। ওয়ার্ডে ভর্তির ৬ দিন। এ কয়েক দিনে তার সাড়ে ৭ হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়েছে। ডাক্তারের লিখে দেওয়া সব ইনজেকশন বাইর থেকে কেনা হয়েছে।
শিশু ওয়ার্ডে এক্সট্রা ১৮, ৩২, ১৮, ৫বি, ৬, ৭, ১৪, ৯, ১০, ১৬,৩২ এ, ৫০, ৫৫, ৬৩, ৫৮, ৬৪, ৩৭ নম্বর বেডের রোগীদের মেরোপেনেম ১ গ্রাম ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে বলে অর্ডার খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা মেলেনি।
মেডিকেলের একাধিক স্টাফ নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ডিউটি শেষে মজুদ করা ওষুধ হাতব্যাগে করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সিনিয়র স্টাফ নার্সরা ওয়ার্ডের আয়া, ওয়ার্ডবয়কে দিয়ে ছুটির সময় ওষুধের ব্যাগ নিচে নামায়। তাদের হাতে যেহেতু ওষুধের ব্যাগ থাকে না, তাই সন্দেহ করার সুযোগ নেই। সিনিয়র স্টাফ নার্সদের যোগসাজশ করে অনেক জুনিয়র নার্সও ওষুধ চুরি করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স দীপ্তি রাণী দেবী বলেন, ‘আমাদের তো চেকিং হয় না। চেকিং হলেই তো বুঝা যেতো, কেউ ওষুধ পাচার করছে কিনা। আন্দাজে কথা বললেতো সত্যতা থাকে না।’
৯ নম্বর শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স সোমা দাশ বলেন, ‘আমি শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, আমার ওয়ার্ড থেকে কোনো ওষুধ বাইরে পাচার হয় না। আমি ভগবানকে বিশ্বাস করি। তাই সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি, করে যাব।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ওষুধের সংকট কিছুদিন আগ পর্যন্ত ছিল। এখন পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ রয়েছে। তারপরও রোগীরা কেন পাচ্ছেন না, তা ভেবে পাই না। নার্সদের অর্ডার খাতা অনুযায়ী ওষুধ বিতরণ হচ্ছে কিনা, এটি খোঁজ নিয়ে দেখবো।’
ডিজে