রেল টিকেটে ‘ঈদের হাওয়া’, বন্ধে শহর ছাড়ছে মানুষ

করোনা ঝুঁকি এড়াতে সোমবার (১৬ মার্চ) থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার পর থেকে চাপ বেড়েছে রেল টিকেট বিক্রিতে। শুধুমাত্র বন্ধ ঘোষণার দিনই বিক্রি হয়েছে আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণ টিকেট!

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর সূত্র জানায়, ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটির দিন। ২৭ ও ২৮ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটি। টানা তিনদিনকে সামনে রেখে টিকেট বিক্রি হয়েছে বেশি। করোনা শনাক্তের পর প্রথমদিকে কিছুটা কমেছিল রেল টিকেটের বিক্রি।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) বিক্রি হয়েছে ১০ হাজার ৫৫টি টিকেট। শুক্রবার (১৩ মার্চ) বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার ১৯৪, শনিবার (১৪ মার্চ) বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার ৬২৯ এবং রোববার (১৫ মার্চ) ৭ হাজার ৮৩৬ যাত্রীর টিকেট।

কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার দিন অর্থাৎ সোমবার (১৬ মার্চ) একদিনেই ১৩ হাজার ৭৭৮টি টিকেট বিক্রি হয়েছে।

তবে কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পরই দ্বিগুণে ঠেকলো টিকেট বিক্রি— এমন প্রশ্নের উত্তরে সংশ্লিষ্টরা জানান, বিষয়টি বিস্ময়কর। তবে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) বন্ধের দিন থাকায় আগেই টিকেট কেটেছেন যাত্রীরা। তবে গত কয়েকদিনে বেশির ভাগ টিকেট কাটা হয়েছে ২৬ মার্চ ও পরবর্তী দুই দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে।

পূর্বাঞ্চল রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ছুটি থাকলে মানুষের বাড়ি যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তাই বন্ধের দিনগুলোতে ট্রেনে যাত্রী বেশি হয়ে থাকে। তবে যাত্রীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা মাইকিংসহ অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনার ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলসহ বন্ধ করে দেওয়ায় নিরাপদ বাহন হিসেবে ট্রেনে চড়েই নেত্রকোনায় বাড়ি ফিরেছি। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে বন্ধ ঘোষণা করায় ট্রেনে প্রায় ঈদের মতই যাত্রীদের চাপ ছিল। যদিও করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে জনসমাগম এড়িয়ে চলা উচিত ছিল আমাদের। কিন্তু উপায় তো নেই।’

এদিকে প্রাণঘাতি করোনা মোকাবেলায় জনসমাগম ও ভীড় এড়িয়ে চলাসহ বেশকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু বাস্তবে এসব নির্দেশনার বেশির ভাগই তোয়াক্কা করছেন না সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সরকারি বন্ধের দিনে চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলোতে লোক সমাগম ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের।

এমন পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবেলায় নিজেদের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এরই মধ্যে সিএমপি’র পক্ষ থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, কর্ণফুলী শিশুপার্ক, জাম্বুরী পার্ক ও চিড়িয়াখানায় জনসাধারণের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া দিয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার সংক্রমণ রোধে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে নগরীর সিআরবি, নেভালসহ বিভিন্ন জায়গায় নজর রাখছে পুলিশ। করোনাভাইরাস যাতে না ছড়ায় এ জন্য সরকার যে সকল পদক্ষেপ নেবে সিএমপি তা বাস্তবায়নে সক্রিয় থাকবে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!