রেলে ‘বাজেট সংকট’, ২ মাসের বেতন পায়নি ৯১ শ্রমিক—পেনশন, বিল প্রদানও বন্ধ

বাজেট সংকটে দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে অনেক শ্রমিকের, বন্ধ রাখা হয়েছে অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন প্রদানও। এছাড়া অর্থ সংকটের কারণে ২৯টি বিল ফেরত পাঠিয়েছে রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) অর্থ ও হিসাব বিভাগ।

বাজেট সংকটের কথা রেল কর্তৃপক্ষ স্বীকার না করলেও তার প্রমাণ মিলেছে অর্থ ও হিসাব বিভাগের পাঠানো এক চিঠিতে। যেখানে বাজেট বরাদ্দ অপ্রতুল হওয়ায় বিল ফেরত পাঠানোর কথা উল্লেখ করা হয়। তবে শ্রমিকরা ধারণা, আইবাস (ইন্টারগেটেড বাজেট এণ্ড একাউন্টিং সিস্টেম) জটিলতার কারণে তাদের এই হাল।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংস্থাপন বিভাগ সূত্র বাজেট সংকটের কথা উল্লেখ করে পাহাড়তলী ডিসিও ও ডিটিও দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়। সহকারী বিভাগীয় হিসাব কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোবাইব স্বাক্ষরিত চিঠিতে বাজেট স্বল্পতায় রেশন, ধোলাই, রানিং বিলসহ ২টি বিভাগে ২৯টি বিল ফেরত পাঠানোর কথা উল্লেখ আছে।

সংস্থাপন বিভাগের পাঠানো চিঠিতে বিভাগীয় বাণিজ্যিক বিভাগে ১৪টি ও বিভাগীয় পরিবহন বিভাগে ১৫টি বিল ফেরত দিয়ে বাজেট এনে পুনরায় বিল পাঠানোর অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়।

জানা যায়, বাজেট সংকটের কারণে ২ মাস বেতন পাচ্ছেন না প্রকৌশল বিভাগের সিজিএফওয়াইয়ে কর্মরত ৯৬জন কর্মচারী। এছাড়া পেনশনের টাকা পাচ্ছেন না সাড়ে ১৭ হাজার শ্রমিকের মধ্যে আড়াই হাজার অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক। একই সঙ্গে মেডিকেলের সহস্রাধিক শ্রমিকও বেতন থেকে বঞ্চিত। বিষয়টি বাজেট সংকট হলেও কর্তৃপক্ষ দায় চাপানোর চেষ্টা করছে আইবার সিস্টেমের। এতে করে আইবার সিস্টেম নিয়ে বিরূপ ধারনার সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।

এ বিষয়ে রেলওয়ের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে কি কারণে দুই মাস ধরে বেতন-পেনশন প্রদান বন্ধ সে বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ।

এদিকে, রেল শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বেতন ও পেনশন বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে মহাব্যবস্থাপক ( পূর্ব) জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে দেখা করে শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন করার বিষয়টি অবহিত করেন। জিএম দ্রুত বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, আমাদের অর্থ ও হিসাব বিভাগ থেকে ১৪টি বিল ফেরত পাঠানো হলেও আমি পুনরায় বিল পাঠিয়েছি। কারণ আমার খাতে বাজেট ছিল।

রেলওয়ে অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তা কামরুন্নাহার বলেন, বাজেট সংকট নিরসনে ইতিমধ্যেই রেল ভবনে বৈঠক হয়েছে। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।

কেএস/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!