রেলের টাকায় ‘জ্বিনের আছর’, চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম আসতেই এবার হাওয়া ৫৮ হাজার

টিকিট বিক্রির দেড় লাখ টাকা গায়েব এক মাসেই

একমাসের ব্যবধানে দুই দফায় রেলের টিকিট বিক্রির দেড় লাখ টাকা গায়েব হয়ে গেল, অথচ রেলের কোনো ‘রা’ নেই অপরাধীদের বিরুদ্ধে। উল্টো রেলের টাকার ওপর ‘জ্বিনের আছর’ ভর করেছে বলে মন্তব্য করছেন দায়িত্বশীলরা।

গত ২৯ ডিসেম্বর রেলের টিকিট বিক্রির ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা চট্টগ্রাম আনার সময় মাঝপথে গায়েব হয়ে যায়। এ ঘটনার ১ মাস পার না হতেই একই ধরনে গত ২৮ জানুয়ারি আবারও ৫৮ হাজার ৯৮৮ টাকা গায়েব হয়ে গেল।

জানা যায়, চাঁদপুর থেকে টিকিট বিক্রির টাকা লাকসাম স্টেশন আসে। সেখান থেকে চট্টগ্রাম ক্যাশ অফিসে জমা হয়। কিন্তু চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন পৌঁছার আগেই গায়েব হয়ে যায় টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২৮ জানুয়ারি নোয়াখালী এক্সপ্রেস লাকসাম স্টেশনে পৌঁছানোর আগে তিনটি ব্যাগে থাকা ৫৮ হাজার ৯৮৮ টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঢাকাগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনে গার্ড রুমের লকারে ছিল এ টাকা।

এ সময় একজন হাবিলদারের নেতৃত্বে ৩-৪ জন সৈনিক পাহারায় ছিল। ৪৫ আপ ট্রেনটিতে গার্ড রুমের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন হাবিলদার দেলোয়ার।

টাকা গায়েবের খবর পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করতে দ্রুত লাকসাম স্টেশনে ছুটে যান নেজাম উদ্দিন (এসি ডাব্লিউ) ও সাইফুল ইসলাম মানিক (এসি ক্যাশ)। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নেজাম উদ্দিন জানান, বাণিজ্যিক কর্মকর্তার নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসেছি।

নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, লাকসামের নাথের পেটুয়া থেকে লাকসাম স্টেশন এই দুই স্থানের মধ্যে টাকাগুলো মিসিং হয়। হাবিলদার দেলোয়ার নাথের পেটুয়া স্টেশনে চা পান করতে যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে টাকাগুলো গায়েব হয়ে যায়। ছয়টি ব্যাগের তিনটিতে টাকা ছিল বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হাবিলদার দেলোয়ারের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করেও সংযোগ মেলেনি।

এদিকে গত ২৯ ডিসেম্বর টাকা উধাও হওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে গায়েব হওয়া ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা হিসেবে জমা করেন দায়িত্বশীলরা। এ তথ্য নিশ্চিত করে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, ২৮ জানুয়ারি ২য় দফায় একই স্টাইলে ৫৮ হাজার ৯৮৮ টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায়ও দায়িত্ব অবহেলাকারীরা নিজ থেকে রেলের এ টাকা জমা দেন।

দুটি ঘটনায় দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে লাকসাম স্টেশন এক কর্মকর্তা বলেন, এভাবে জরিমানা সমাধান নয়। দরকার গায়েবি ‘জ্বিনের আছর’ সনাক্ত করা। তিনি প্রশ্ন তুলেন, লাকসাম স্টেশনে সিসি ক্যামেরাগুলো কী কাজে লাগে। যেখানে মনিটরিং ব্যবস্থা দুর্বল সেখানে এমন ঘটনা অস্বাভাবিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm