আদালতের নির্দেশ না মেনে যাতায়াতের পথ ও উঠান দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে এসএম ফারুক নামের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মধ্যম মাদার্শার চহুরকাজীর বাড়ির রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের ফলে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে ছেনোয়ারা বেগম নামের ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধার পরিবার।
জানা গেছে, বছরখানেক আগে চলাচলের পথ ও উঠান দখল করে আইনজীবী এসএম ফারুক ভবনের নির্মাণ কাজ করলে এতে বাধা দেন ছেনোয়ারা বেগম। ওই সময ফারুক ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে ছেনোয়ারা বেগমের উপর হামলা করে। বিষয়টি নিয়ে মিস্ মামলাসহ দুটি মামলাও চলমান রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ দিন আগে আইনজীবী ফারুক আবারও চলাচলের পথ বন্ধ করে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করলে ছেনোয়ারা বেগমের পরিবার আবারও বাধা দেয়। এতে আইনজীবী ফারুক তাদের বাধা না মেনে ভবনের নির্মাণ কাজ চালু রাখে। পরে আদালত চলাচলের পথ বন্ধ না করে স্থিতিশীল রাখার জন্য হাটহাজারী মডেল থানাকে তদারকির নির্দেশ দেন এবং চলাচলের পথ বন্ধ না করতে আইনজীবী ফারুককে নোটিশ দেন। এরপরও ফারুক ভবন নির্মাণ কিছুতেই বন্ধ না করলে ছেনোয়ারার পরিবার হাটহাজারী থানার এসআই হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি।
ভুক্তভোগী আবু সুফিয়ান ও আবুল কালাম বলেন, ‘ফারুক আইনজীবী হওয়ায় বিভিন্ন সময় মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করে আসছে। এখন আমাদের চলাচলের পথ বন্ধ করে ভবন নির্মাণ করছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও গায়ের জোরে ভবন নির্মাণ করছেন। তিনি এলাকার কোন সালিশ বিচার মানে না। কেন না আমরা তার কাছ থেকে বাঁচতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগও করেছি। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমানকে একাধিকবার বললেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। এখন আমরা খুবই অসহায়।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আইনজীবী এসএম ফারুক বলেন, ‘নির্মাণাধীন ভবনের জমিতে তাদের কোনো জমি নেই। এখানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ১৪৭ ধারা আছে তা ঠিক। তবে ১৪৭ ধারা কি সেটা জানতে হবে? ১৪৭ ধারা হল রাস্তা সংক্রান্ত মামলা। আমি তো রাস্তায় কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছি না। আমি আমার জায়গায় বিল্ডিং করছি। কিন্তু তাদের কারণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতে পারিনি।’
তবে চলাচলের রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমিতো রাস্তা বন্ধ করে ভবন করছি না। মামলার বিষয়ে আমার তথ্যপ্রমাণ আমি আদালতে পেশ করবো।’
হাটহাজারী মডেল থানার পরিদর্শক (এসআই) ও তদন্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘চলাচলের পথ বন্ধ না করে স্থিতিশীল রাখার বিষয়টি এসএম ফারুককে নোটিশে বলা হয়েছে। এখন তিনি যদি ভবন নির্মাণকাজ চালিয়ে যান তাহলে ভুক্তভোগীদের কাজে বাধা দিতে হবে। না হয় সামাজিক বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে হবে।’
সিএম/এএইচ