রানা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সমাবেশ চট্টগ্রামে

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রামে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারসহ সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষভাবে তদন্তের দাবিও জানানো হয়।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় নগরীর চেরাগী পাহাড় চত্বরে হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ, যুবক ঐক্য পরিষদ, মহিলা ঐক্য পরিষদ, শিক্ষক ঐক্য পরিষদ ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

মহানগর ঐক্য পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার পরিমল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রফেসর ড. জিনবোধি ভিক্ষু। বিশেষ অতিথি ছিলেন তাপস হোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইন্দু নন্দন দত্ত, অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, অ্যাড. চন্দন বিশ্বাস, শরৎজ্যোতি চাকমা ও শুভ্রদেব কর।

সভায় বক্তারা বলেন, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যদিয়ে দেশের ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রায় প্রতিদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হচ্ছে। ইদানিং বিভিন্ন সংখ্যালঘু পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং যাদের জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ আছে, তাদের ওপর কৌশলে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। আজ সারাদেশে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রাস্তায় নেমেছে।

বক্তারা বলেন, এদেশে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি। কিন্তু দেশ থেকে বিতারণের জন্য আপনারা যে দুরভিসন্ধি করেছেন। দেশকে রাষ্ট্রধর্ম করেছেন। রাষ্ট্রধর্ম রেখেই মুখে বলেন, আপনারা সংখ্যালঘু কেন, আপনাদের পাশে আমরা আছি। আমাদের সামনে দুর্গাপূজা। বলা হচ্ছে, মাদরাসা ছাত্ররা পাহারা দেবে, আপনারা পূজা করুন। আমরা বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাদের অনেক মা-বোনের ইজ্জত গেছে। এদেশ স্বাধীন হয়েছে ৭১ সালে। সেই থেকে দেশের জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আমাদের শরীরের তিনভাগ রক্ত দিয়েছে এদেশের জন্য। এদেশ থেকে আমাদের যদি তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করা হয় এবং আজ যারা আমাদের উপর নির্যাতন করেছেন তাদের অবস্থা সামনে আরও ভয়াবহ হবে। দেশে একদিকে নির্যাতন, জুলুম করছে, আরেকদিকে পাহাড়ি জনগণের ওপর জঘন্য নির্যাতন করা হচ্ছে। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, রানা দাশগুপ্তকে ঘায়েল করতে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তাকে ঘায়েল করে সনাতনীদের অস্তিত্ব বিলীনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ মিথ্যা মামলা যদি প্রত্যাহার করা না হয় এবং তাকে যদি জেলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে এই সরকারকে বলব—আমরা রাস্তায় আছি, থাকব এবং সারা বিশ্ব দরবারে আপনাদের বিরুদ্ধে বিচার দেব।

অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার চৌধুরী সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোবিন্দ প্রসাদ মহাজন, সুভাষ চৌধুরী, বিষ্ণু যশা চক্রবর্তী, তাপস কান্তি দে, সাগর মিত্র, রাজীব দাশ, সাজীব বৈদ্য, সুমন দে, সঞ্জয় দে, প্রণবরাজ বড়ুয়া, বিজয় কৃষ্ণ বৈষ্ণব, প্রণব দাশগুপ্ত, অ্যাডভোকেট রুবেল পাল, কল্যাণ রায়, ডা. তপন দাশ, অ্যাড. সুমন সরকার, রিমন মুহুরী, গৌতম দাশ, রাহুল দত্ত, সীমান্ত দত্ত ঋজু, মিনু রানী দেবী, হরিপদ চৌধুরী বাবুল মাস্টার শ্যামল দে, মীনাক্ষী দেবী, সতেজ চৌধুরী, রমা বৈদ্য, রূপসী দাশ, দীপু সেন, প্রবীন দাশ ও সাজীব দাশ।

শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল চেরাগী চত্বরে থেকে শুরু হয়ে আন্দরকিল্লা মোড় হয়ে পুনরায় চেরাগী চত্বরে এসে শেষ হয়।