রাঙামাটিতে লুকানো অ্যাপে মোবাইল হ্যাক, গোপন ভিডিও ছড়ান স্বামীই

স্ত্রীর অজান্তেই মোবাইলে নজরদারির অ্যাপ লুকিয়ে ইনস্টল করে হ্যাক করা হয় জিমেইল আইডি, ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার থেকে এমনকি হোয়াটসঅ্যাপও। তারপর সেই অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় কুরুচিপূর্ণ পোস্ট, ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয় ফেসবুকে। স্ত্রীকে দেওয়া জায়গা ফিরে পেতে এমন কাণ্ড ঘটান স্বামী নিজেই।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছেন মণিকা আক্তার নামের ভুক্তভোগী ওই নারী। মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৮ জুলাই) সকালে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জহিরুল কবির এ আদেশ দেন।

মামলার আসামিরা হলেন রাঙামাটি সদর উপজেলার আমানতবাগ রোডের ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মো. আবুল হোসেনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের পশ্চিম ভাসানটেক এলাকার বাসিন্দা মৃত মো. আবুল হোসেনের মেয়ে শাহিনা আক্তার ও ছেলে শহিদুল আলম স্বপন, হিমেল জীবন চাকমা এবং বেলাল হোসেন টিটু।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে মামলার বাদী মণিকা আক্তারের সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমানের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মিথিলা রহমান (১৪) ও আলভি হোসেন খান (৮) নামের দুই সন্তানের জন্ম হয়। ২০১৭ সালে ৪ জুলাই রাঙামাটি সদর উপজেলার আমানতবাগ কলেজ গেট এলাকার ৮ শতক জমি হলফনামামূলে স্ত্রী মণিকা আক্তারকে দান করেন মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর থেকে মামলার আসামি শাহিনা আক্তার (৩৯) ও শহিদুল আলম স্বপন জমিটি দান অথবা বিক্রির জন্য চাপ দিতে থাকেন। শাহিনা আক্তার সম্পর্কে মণিকার ননদ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়।

একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিনা ও স্বপনের প্ররোচণায় মোস্তাফিজুর অনুমতি ছাড়া মণিকার মোবাইলে একটি অ্যাপ ইনস্টল করেন। সেই অ্যাপের মাধ্যমে জিমেইল আইডি, ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেন তিনি। ওই অ্যাপের মাধ্যমে মণিকার ভিডিও ধারণ করা হয়। এরপর মণিকার নামে বিভিন্ন সময় কুরুচিপূর্ণ পোস্ট, ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে দেন মোস্তাফিজুর।

এ ঘটনায় রাঙামাটি থানা মামলা না নিলে ভুক্তভোগী মণিকা আদালতে যান।

বাদী পক্ষের আইনজীবী জানান, ‘নজরদারির লুকানো অ্যাপ ব্যবহার করে গোপনে ভিডিও ছড়িয়ে মানুষের গোপনীয়তার বিষয়গুলো বিঘ্নিত হচ্ছে, তা আমরা আদালতকে জানিয়েছি। আদালত বিষয়টি খুব ভালোভাবে শুনেছেন এবং সিআইডি রাঙামাটিকে ফরেনসিক রিপোর্টসহ অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন।’

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!