রাউজানে চাঁদার জন্য ক্রসফায়ারে খুনের হুমকি পেয়েছিলেন ডাক্তার, ৯ বছর পর মামলা

আসামি দুই এসআইসহ ওসি প্রদীপ

৩০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে চট্টগ্রামের রাউজান থানার পুলিশ এক ডাক্তারকে ধরে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। পরে তাকে একটি সাজানো মামলায়ও জড়িয়ে দেওয়া হয়।

প্রায় ৯ বছর পর মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঘটনার শিকার সেই চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম এবার রাউজান থানার সাবেক ওসি ও দুই উপপরিদর্শকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন রাউজান থানার পুলিশকে ডা. জাহাঙ্গীরের আবেদনটি মামলা হিসেবে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, রাউজান থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস, এসআই শাফায়েত হোসেন, এসআই টোটন মজুমদার, পাইওনিয়ার হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা. ফজল করিম ওরফে বাবুল, পাইওনিয়ার হসপিটালের পরিচালক মনজুর হোসেন ও পাইওনিয়ারের সুপারভাইজার মো. জাহাঙ্গীর আলম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল রাউজান নোয়াপাড়া পথেরহাট এলাকার চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমকে সাদাপোশাকে গিয়ে ধরে নিয়ে যান রাউজান থানার এসআই টোটন মজুমদার। এর আগে চিকিৎসকের কাছে টোটন ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। নইলে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেন। চিকিৎসকের অপরাধ, তিনি বিএনপি করেন।

রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ার বাসিন্দা চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় পথেরহাটে অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তার পরিচালিত প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখছিলেন। এসআই টোটন মজুমদার বিএনপির কমিটিতে নাম থাকায় জাহাঙ্গীর আলমকে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেন এবং বাঁচতে চাইলে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় এসআই টোটন মজুমদার, এসআই শাফায়েত আহমদ, রাউজান থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জাহাঙ্গীর আলমের চেম্বারে গিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে নোয়াপাড়ার অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে সাদা পোশাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নেওয়া হয়।

এরপর চিকিৎসকের মাথায় পিস্তল রেখে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করে। পরে এসআই টোটন মজুমদারসহ আসামিরা মিলে ২০১৫ সালে ৪ এপ্রিল তারিখের একটি মিথ্যা মামলা সাজায়। সেই মামলার প্রেক্ষিতে ১৫ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে গ্রেপ্তার করে প্রায় ৮ ঘণ্টা পর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে সাজানো অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গাড়িচালক রাসেলের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু পরে রাসেল আদালতে হলফনামা দিয়ে জানান, চিকিৎসক জাহাঙ্গীর নামের কাউকে তিনি চেনেন না। তার কাছ থেকে কেউ টাকা নেয়নি। গত ২৯ আগস্ট আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm