যু্দ্ধাপরাধী/ ছাত্রলীগের বাধার মুখেই মোমিনুল হক চৌধুরীর জানাজা প্যারেড মাঠে

ছাত্রলীগের বাধার মুখেই চট্টগ্রামের চকবাজার প্যারেড মাঠে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মোমিনুল হক চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্রলীগ দাবি করেছে, তাদের বিক্ষোভে পুলিশ বাধা দিয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করেছে। শনিবার দুপুর দেড়টায় চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে (প্যারেড মাঠ) মাওলানা মোমিনুল হক চৌধুরীর জানাজাকে ঘিরে জামায়াত-শিবিরও শোডাউন করে।

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল করিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সাবেক নেত্রী ও বর্তমানে মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী ওরফে রিজিয়া নদভীর পিতা চিহ্নিত আলবদর কমান্ডার মোমিনুল হক চৌধুরীর জানাজা কলেজ মাঠে আয়োজনের ব্যাপারে কলেজ প্রশাসনকে কিছুই জানানো হয়নি। আমাদের শঙ্কা ছিল মতিউর রহমান নিজামীর (জামায়াতে ইসলামীর আমীর) জানাজায় অংশ নিয়ে জামায়াত-শিবির যেভাবে কলেজে ক্যাম্পাসে ভাঙচুর করেছিল আজও তা করতে পারে। তাই আমরা প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলাম। মিছিল নিয়ে শের-এ-বাংলা ছাত্রাবাসের সামনে গেলে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। অথচ বাধা দেওয়া উচিত ছিল যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসরদের।’

পুলিশ দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নেয়।
পুলিশ দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নেয়।

মাহমুদুল করিম জানান, ‘কলেজ প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজ শিবিরের সাবেক সভাপতি রায়হান ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়েরসহ আরো নেতাকর্মীরা বিভিন্ন উস্কানিমূূলক শ্লোগান দিচ্ছিল। আমাদের দেখে তারা ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। জানাজা শেষে মাইকে ইট মারার ঘোষণা দেয় শিবিরকর্মীরা। হামলায় কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন। এরা হলেন মিনারুল হক, শেফায়াত হোসেন রাজু ও জিয়াউদ্দীন আরমান।’

প্রত্যক্ষদর্শী শাহনেওয়াজ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, জামায়াত নেতার জানাজা প্যারেড হওয়ার ঘোষণা তারা দলীয়ভাবে সম্ভবত সবাইকে জানিয়েছিল। সবাই চকবাজারের সব মসজিদে বিচ্ছিন্নভাবে জোহরের নামাজ পড়েছে। নামাজ শেষে সব মসজিদ থেকেই খন্ড খন্ডভাবে প্যারেড মাঠে এসে জড়ো হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের সমর্থকরা অবস্থান নেওয়ার পর কলেজে ছাত্রলীগ মিছিল করে। মিছিল নিয়ে হোস্টেলের সামনে এলে পুলিশ দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নেয়। জানাজা শেষে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকরা মাঠ ত্যাগ করে চলে যাওয়ার সময় পুলিশ একজনকে আটক করেছে।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করেছে। এর বাইরে আর কিছু নয়।’

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বর্তমান সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা নদভী স্যারের পরিবারের পক্ষ থেকে উনার শ্বশুর মাওলানা মোমিনুল হক চৌধুরীর জানাজা প্যারেড মাঠে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। এই জানাজাকে কেন্দ্র করে যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে সেই ভূমিকা আমরা রেখেছি। এখানে আমাদের উর্ধ্বতন স্যাররা উপস্থিত ছিলেন।’

আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। যাচাইবাছাই শেষে মামলা না থাকলে ছেড়ে দেওয়া হবে।’

জানা যায়, মোমিনুল হক চৌধুরীর জামাতা ও চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীসহ জামায়াতের নেতাকর্মীরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।

এফএম/সিপি

ksrm