চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পাঁচ সদস্যকে পিটিয়ে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন— ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ সোহেল, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খায়ের হোসেন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলাম, ৬ নম্ব ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রবিন চৌধুরী। এছাড়া নাজেহাল করা হয়েছে ইউপি সদস্য ওহিদুল আলম, মহিলা সদস্য শাহনাজ, রোজি আক্তার ও ফাতেমা বেগম।
আহত ইউপি সদস্য সোহেল জানান, ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মঙ্গলবার পরিষদ কার্যালয়ে ‘তরুণদের দেশ গড়ার অঙ্গীকার জনসেবায় স্থানীয় সরকার’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যা লি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়ে অনুষ্ঠানে আসার দাওয়াত দেন। সেই দাওয়াতে মঙ্গলবার দুপুরে ৩ মহিলা ইউপি সদস্যসহ ৯ জন সদস্য অনুষ্ঠান স্থলে আসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করার কথা ছিলো সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লা আল মামুন। তবে তিনি অনুষ্ঠানে আসেননি।
আহত অন্যান্য ইউপি সদস্য জানান, সোনাইছড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মহিমুদ্দিন মিন্টু, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহেদ ও যুবদল নেতা সোহেল, শ্রমিকদলের শহর আলী, নুর উদ্দিনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অর্ধশতাতিক নেতাকর্মীরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত ইউপি সদস্যদের পেটান ও লাঞ্ছিত করে পরিষদ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।
ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত চৌকিদারা রাসেল, সালাহ উদ্দিন ও ক্ষিরমোহন বলেন, হামলার সময় ইউপি সদস্যদের রক্ষা করতে আসলে তারা আমাদের উপরও হামলার চেষ্টা করেন।
সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের অর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লা আল মামুন বলেন, হামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলায় বিশেষ কাজ থাকাতে আমি অনুষ্ঠানেও যেতে পারিনি।
তবে হামলায় অভিযুক্ত সোনাইছড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মহিমুদ্দিন মিন্টু বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ইউপি চেয়ারম্যানসহ অনেক মেম্বার পালিয়ে গেছে। কিন্তু এরা আমাদের কথা না শুনে ইউনিয়ন পরিষদে এসে মিটিং করতেছে। গতকাল ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইউনিয়ন এ বিষয়ে বিএনপির নজীর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর চৌধুরীর কাছে অনুমতি চান। তখন তিনি বলেন, কোনো অঘটন ঘটলে তার দায় ভার সম্পূর্ণ সচিব সাহেবকে নিতে হবে। কিন্তু মিটিংয়ের কথা আমাদের বিএনপি নেতারা জানার পর উত্তেজিত হয়ে যায়। আমরা সেখানে গিয়ে ঘটনা শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু একজন সেখানে বসেছিল। পরে ইউএনও সাহেব, ওসি সাহবের পরামর্শে ওনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
ইউপি সদস্যদের লাঞ্ছিত ও মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি গিয়েছি একদম শেষে। এই ইউপি সদস্যরা আমাদের, বিএনপি নেতাকর্মীদের অনেক অত্যাচার করেছে। সেই ক্ষোভ থেকে হয়ত ধাক্কা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের উপর থেকে পরিস্কার নিষেধ আছে, কারও প্রতি অন্যায় না করার, সে যেই হোক।’