মেয়েঘটিত নয়, চবির রুবেল বলছেন কমিটির জন্যই ছিল কেন্দ্রের ‘পরোয়ানা’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন নিজের এক অনুসারী গ্রেপ্তার হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল দাবি করেছেন, তাকে দেওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নোটিশ নারীঘটিত কোন কারণে নয়, ‘কমিটি জমা না দেওয়া’তেই কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে তাকে। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে রুবেলের এই দাবি কেন্দ্র থেকে যাচাই করা যায়নি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনার দুদিন পর গত ১৯ জুলাই রাত ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলকে ‘শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে লিপ্ত’ থাকার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার কারণসহ আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

হঠাৎ কী এমন ‘শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের’ জন্য রুবেলকে শো-কজ করা হলো এই তথ্য জানতে চবি ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। তবে কোনো কোনো নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মেয়েঘটিত একাধিক ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ার কারণে রুবেলের বিরুদ্ধে ক্ষেপেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এদিকে শনিবার (২৩ জুলাই) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চবি ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য অনেকদিন ধরে তাগাদা দিচ্ছিলো কেন্দ্রীয় কমিটি। সেজন্য আমাকে ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপুকে আলাদা আলাদা করে নামও জমা দিতে বলা হয়।’

তিনি বলেন, ‘টিপু নাম জমা দিতে পারলেও আমি আমার ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে নাম জমা দিতে পারিনি। তাই ওনারা আমার কাছে কেন নাম জমা দিচ্ছি না সেজন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। তবে আমি ইতিমধ্যে নাম জমা দিয়েছি এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চবি ছাত্রলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।’

চবির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় নিজের নাম জড়ানোর বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রুবেল বলেন, ‘কিছু সংগঠন ও শিবির কর্মী আমাকে এই ঘটনায় জড়িয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চেয়েছিল। তারা প্রকৃত অপরাধীর বিচার না চেয়ে আমার বিচার চেয়েছে। কিন্তু আমি এবং আমার সংগঠন সর্বপ্রথম আমাদের বোনের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় বিচার দাবি করি এবং আসামিদের ধরতে সহযোগিতা করি প্রশাসনকে।’

চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে রুবেল আরও বলেন, ‘কিছু সংগঠন বিচার না চেয়ে মোমবাতি হাতে নিয়ে মানববন্ধন করছে, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। যারা রাস্তায় থাকতে পছন্দ করে, তারাই অপরাধীর বিচার না চেয়ে রাস্তায় রাস্তায় এসব করে বেড়িয়েছে। কিন্তু আমরা ছাত্রলীগই অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের সন্মুখীন করেছি। ওরা যদি আমাদের নামে কুৎসা না রটিয়ে আমাদের সহযোগিতা করতো, তবে আরো আগে অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হতো।’

এদিকে চবির যৌন নিপীড়নের ঘটনায় আটক চারজনের মধ্যে একজনকে নিজের কর্মী বলে স্বীকার করেছেন রুবেল। তবে অপর তিনজনকে আ জ ম নাছিরপন্থী ভিএক্স গ্রুপের সদস্য বলে জানান চবি ছাত্রলীগের এই শীর্ষ নেতা।

বিএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!