মৃত্যুর মিছিলে ঢাকাকেও পেছনে ফেলে ‘হ্যাটট্রিকে চট্টগ্রাম’

টানা তৃতীয় দিনের মতো দেশে করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হলো চট্টগ্রামে। এর আগে পরপর দুদিন ৯ ও ১০ জুলাই দেশের সব বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল চট্টগ্রামে। তৃতীয় দিনে এসেও মৃত্যুর শীর্ষস্থান দখল করে অনাকাঙ্ক্ষিত ‘হ্যাটট্রিক’ করলো চট্টগ্রাম। আরও আশংকাজনক ব্যাপার হচ্ছে আগের দুদিনের চেয়ে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্যে চট্টগ্রামেরই ১৭ জন। এরপর ঢাকা বিভাগে ১২ জন। দেশের বাকিসব বিভাগ মিলে এই সংখ্যা মাত্র ৮ জন। এ নিয়ে দেশে ভাইরাসটির সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ২৭৫ জনে। এছাড়া একই সময়ে নতুন করে দুই হাজার ৯৪৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। তাতে করে সর্বমোট এক লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হলেন।

শুক্রবার (১০ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের বিশ্লেষণ তুলে ধরে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, মৃতদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগেরই বাসিন্দা রয়েছেন ১৭ জন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেটে দুজন করে এবং বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ জন এবং বাড়িতে থেকে ১৪ জন।

নতুনভাবে মারা যাওয়াদের বয়স ও অন্যান্য বিশ্লেষণে তিনি আরও জানান, মৃত ৩৭ জনের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ এবং ৮ জন নারী। এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ২ হাজার ২৭৫ জনের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৭৯৯ জন, যা শতকরা ৭৯ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং নারী ৪৭৬ জন, শতকরা হিসাবে ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ। মারা যাওয়াদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সসীমার একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের সাতজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৫ জন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সসীমার চারজন রয়েছেন।

তিনি নতুন যুক্ত একটিসহ মোট ৭৭টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ হাজার ৩৭৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয় ১৩ হাজার ৪৮৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো নয় লাখ ১৮ হাজার ২৭২টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৯৪৯ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৭ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ২৭৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৮৬২ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৮৬ হাজার ৪০৬ জনে।

শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ২৭ শতাংশ।

অন্যদিকে, সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্য মতে, শুধুমাত্র চট্টগ্রাম জেলায় ১০ জুলাই পর্যন্ত ১১ হাজার ১৯৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে ৭ হাজার ৭৯৫ জন নগরের ও ৩ হাজার ৩৯৮ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে মারা গেছেন মোট ২১৩ জন, যাদের মধ্যে ১৫২ জন নগরের ও ৬১ জন উপজেলার বাসিন্দা। এখন পর্যন্ত একহাজার ৩৪০ জন রোগী করোনাজয় করলেন।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!