মুদ্রানীতি ঘোষণা/ ব্যাপক ঋণের লক্ষ্য সরকারি খাতে, বেসরকারিতে হ্রাস

সরকারি খাতে ব্যাপক হারে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কমানো হয়েছে বেসরকারি খাতে। কমেছে ব্যাপক মুদ্রার যোগানও। বিপরীতে রিজার্ভ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য বাড়ানো হয়েছে। বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে এমন প্রক্ষেপণ নিয়ে বছরের দ্বিতীয়ার্ধ (জুলাই-ডিসেম্বর) ও চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর ফজলে কবির।

ঘোষিত মুদ্রানীতিতে, জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২৫ দশমিক ২ শতাংশ। অথচ খাতটিতে গত জুন নাগাদ ছয়মাসভিত্তিতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ। বিপরীতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ১০ শতাংশ।

অপরদিকে, জুন নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপণ করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। অথচ গত জুন শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এবার বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ।

সূত্রমতে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতির লাগাম ৫ দশমিক ৫০ শতাংশে ধরে রাখার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

তথ্যমতে, গত ডিসেম্বরের ভিত্তিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১১ দশমিক ১ শতাংশ। কিন্তু ডিসেম্বর শেষে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৩ শতাংশে। ওই সময় বেসরকারি খাতেও ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫০ শতাংশে পরিমিত রেখে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত ঋণ প্রসার সংকুলানের লক্ষ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মুদ্রানীতির নীতিভঙ্গিটি আগেকার মতোই সতর্কভাবে সংকুলানমুখী রয়েছে।’

জানা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে সুবাতাসের সঙ্গে প্রবাসী আয়েও ছিল রেকর্ড। এরই ধারাবাহিকতায় গত অর্থবছরে ৩৯ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪০ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে প্রবাসী আয়েও। ওই সময়ে এসেছে ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ব্যাংক খাতে চলছে আমানত ও বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধির মন্থর গতি। বিপরীতে হু হু করে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। একই সঙ্গে বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সূচকেও হয়েছে ঢের অবনমন। পাশাপাশি পুঁজিবাজারের বেহাল দশায় এক রকম ধুঁকছে আর্থিক খাত। এমন ‘কঠিন পরিস্থিতিতে’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!