মিতু হত্যা মামলায় জামিন মেলেনি বাবুল আক্তারের

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জামিন আবারও নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (১৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ আশফাকুর রহমান এই আদেশ দেন।

আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুম চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী। তিনি মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূরণ মামলা। মামলা তদন্তের স্বার্থে বাবুল আক্তারের কাছ থেকে যেকোন সময় যেকোন তথ্য জানা জরুরি। আর জামিন পেলে তিনি বিদেশ চলে যেতে পারেন। তাই আদালতকে বাবুল আক্তারের জামিন নামঞ্জুরের জন্য যুক্তি প্রদর্শন করেছি। আদালত বাবুল আক্তারের জামিন নামঞ্জুর করেন।’

অন্যদিকে, বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুম চৌধুরী মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা আদালতকে অবহিত করেছি যে বাবুর আক্তারের বিরুদ্ধে এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। কারন মিতু হত্যা মামলার সে নিজেই বাদি। আর একটা মামলা চলমান থাকলে আরেকটি মামলা চলতে পারে না। আসামিকে গ্রেফতার করা যায় না। আমরা এ আইন সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশ দেখিয়েছি আদালতকে। আমরা আরো বলেছি, মিতু যেদিন খুন হন, সেদিন বাবুল আক্তার ঢাকায় হেডকোয়ার্টারে কর্মরত ছিলেন। তাহলে ঢাকা থেকে কিভাবে তিনি মিতুকে খুন করলেন? আর এ মামলায় যেসব আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে কেউই বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ত থাকার কথা বলেনি। তাহলে এটা বোঝাই যায়, প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তাকে ফাঁসানোর জন্য এ মামলা করা হয়েছে।’

এর আগে গত ১০ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. শফি উদ্দিন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে বাবুল আক্তারকে কারাগারে রাখার আদেশ দেন। গ্রেপ্তারের পর ওইদিনই প্রথমবারের মতো বাবুল আক্তারের জামিনের আবেদন করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে।

স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।

একইদিন (১২ মে) দুপুরে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন— মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া। একইদিন বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে জবানবন্দি দেননি তিনি। বাবুল আক্তারকে বর্তমানে ফেনী জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে।

আইএমই/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!