মায়ের পর মেয়েও, পর পর ‘রহস্যের মৃত্যু’ নিয়ে আতঙ্ক সীতাকুণ্ডে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শেখ নগর এলাকায় জ্বর-কাশি আক্রান্ত হয়ে রেনু বেগম নামে এক গৃহবধূর মুত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা এই মৃত্যুকে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বললেও তার পরিবারের সন্দেহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন রেনু। তার পরিবারের এক সদস্য জানান, পাঁচদিন আগে রেনুর মা জ্বর-কাশি নিয়ে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় মায়ের সাথেই ছিলেন রেনু। সেখানে মায়ের দেখাশোনা করতেন তিনি।

রেনুর ভাসুর আবু নাসির চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলছেন স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে রেনুর। কিন্তু মাত্র পাঁচদিন আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেনুর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তখন মায়ের সাথে হাসপাতালে ছিল রেনু। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে তার জ্বর-কাশি হয়। তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ভালোমত না দেখে একটি স্লিপ ধরিয়ে দেন। এরপর কুমিরা কাজী পাড়া এলাকায় বাপের বাড়িতে ছিলেন রেনু।’

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) তাকে বাপের বাড়ি থেকে সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকার শেখ পাড়া এলাকায় তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই মৃত্যু হয় রেনুর। বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল ১১টায় দাফন করা হয় রেনুকে।

নিহত রেনু সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকার কামাল উদ্দিনের স্ত্রী। কামাল উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মেয়ে সুরাইয়া তাসনীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার মা স্ট্রোকে মারা গিয়েছেন। বুকে কফ ছিল।’

রেনুর মায়ের মৃত্যু সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার নানু ৬ মাস ধরে অসুস্থ ছিলে। তিনি গত শনিবার (২১ মার্চ) মারা যান।’

পৌরসভা কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র হারাধন চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শুনেছি কয়েকদিন আগে তার মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। ’

রেনুর মৃত্যুতে এলাকায় করোনা সন্দেহ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই বাড়িতে এখন কেউ যাচ্ছে না। আর যারা দাফন করেছে তাদের এবং রেনুর পরিবারের সদস্যদের আমরা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছি। জানি না কীভাবে মৃত্যু হলো। তবু সতর্ক থাকা ভালো।’

ওই এলাকার বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘শুনেছি ৫-৬ দিন আগে রেনুর মা মারা গিয়েছে। রেনুর মৃত্যু নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।’

এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘লোকমুখে শুনেছি এই ঘটনার কথা।’ করোনা সন্দেহে মৃত্যর আতঙ্ক ছড়ানোর প্রেক্ষিতে কোন সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোন প্রশাসনিক আদেশ আসেনি।’

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘রেনুর মৃত্যুর ব্যাপারে শুনেছি। তবে কোন প্রবাসী তার ঘরে আসেনি কাজেই এটা কোন ঘটনা না। ৫ দিন আগে রেনুর মা মারা যাওয়ার কোন তথ্য জানা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘আমার জানা নেই।’

এএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!