শীতে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অভিযান ও জরিমানা। এতে সাধারণ মানুষের মাস্ক ব্যবহার বাড়লেও অনেকে নানা অযুহাতে মাস্ক ব্যবহার করছেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন- করোনার এই দ্বিতীয় ধাপে যদি সবাই মাস্ক ব্যবহার না করে তাহলে আক্রান্তের সঙ্গে বাড়তে পারে মৃত্যুর হারও।
জানা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ করেই চট্টগ্রাম নগরে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও জোরদার করে অভিযান। অভিযানে সাধারণ মানুষকে মাস্ক ব্যবহারে সচেতন করার পাশাপাশি অর্থদণ্ডও করা হয়। একইসঙ্গে মাস্কও বিতরণ করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বরের শুরুতে শীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় প্রায় প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের ২-৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থান, বিনোদন কেন্দ্র, শপিংমল ও গণপরিবহনে মাস্ক পরা নিশ্চিতে অভিযানে মাঠে নামে। অভিযানে মাস্ক না পরার অপরাধে আটক, জরিমানা ছাড়াও সচেতনতা ও মাস্ক বিতরণও করা হয়েছে। এছাড়া গত ১০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত একমাসে প্রায় ৩০০টি অভিযান পরিচালনা করে ৪ হাজার জনকে ৩ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া অনেককে আটকের পর মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণও করা হয়।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও রেডক্রিসেন্ট নগরের পাঁচটি প্রবেশপথে মাস্ক ছাড়া কাউকে ঢুকতে না দেওয়াসহ “নো মাস্ক, নো এন্ট্রি” অভিযান ও প্রচারণা শুরু করে। এতে শুরুতে অধিকাংশ মানুষ মাস্ক না পরলেও অভিযান, জরিমানা, সচেতনতা ও মাস্ক পরতে বাধ্য করার ফলে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। তবে অভিযান, জরিমানা ও সচেতনতা কার্যক্রমের পরও নগরের বেশকিছু মানুষ মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, নিউমার্কেট, আগ্রাবাদ ও বাদামতল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষ মাস্ক পরলেও অনেকে বিভিন্ন অযুহাতে মাস্ক ব্যবহার করছে না। আবার অনেককে মাস্ক খুলে চলাফেরা করতে দেখা গেছে।
আরও জানা যায়, সাধারণ মানুষের মাঝে পুরোপুরি সচেতনতা ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান ও জরিমানা চালু থাকবে। এছাড়া অভিযান আরও কঠোর হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। তবে প্রশাসন যতই কঠোর হোক না কেন মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছাড়া করোনা সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব নয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওমর ফারুক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন নভেম্বরের শুরুতে অভিযান জোরদার করে। অভিযানে আটক, জরিমানার পাশাপাশি সচেতনতা ও মাস্ক বিতরণ করে। আগামীতেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতার বিকল্প নেই।
সিএম/এএইচ