পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র গিরিদর্পণ ও সাপ্তাহিক বনভূমি সম্পাদক একেএম মকছুদ আহমেদ মারা গেছেন। মৃত্যুকালে প্রবীণ এই সাংবাদিকের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় রাঙামাটির বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার শহীদ শুক্কুর স্টেডিয়ামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৬৯ সালের ১৫ নভেম্বর একেএম মকছুদ আহমেদের সাংবাদিকতা জীবন শুরু হয় চট্টগ্রামভিত্তিক দৈনিক আজাদীর রাঙামাটি সংবাদদাতা হিসেবে । ১৯৭৩ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক জনপদে। ১৯৭৪ সালে ‘দৈনিক পূর্বদেশ ‘পত্রিকায় রাঙামাটি জেলা সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর যুক্ত হন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও এনায়। ১৯৭৬ সালে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের রাঙামাটি জেলা সংবাদদাতা হিসেবে যোগ দেন। এছাড়াও ‘নিউ নেশান’ ‘ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ পত্রিকার রাঙামাটি সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিবিসি, দি টেলিগ্রাম, সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের একমাত্র মুখপত্র ‘সাপ্তাহিক বনভূমি’।
১৯৮১-৮৩ সাল থেকে তিনি দৈনিক গিরিদর্পন পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করেন। ২০২১ সালে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। দৈনিক আজাদী ২০০৩ সালে তাকে ‘চারণ সাংবাদিক’ হিসেবে সম্মাননা দেয়। তিনি রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতিও।
একেএম মকছুদ আহমেদ ১৯৪৫ সালের ১০ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মগাদিয়া ইউনিয়নের মগাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জামাল উল্লাহ ও মা জমিলা খাতুন। ১৯৬৬ সালে তিনি কাউখালী উপজেলার কলমপতির বেতছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি নিয়ে রাঙামাটি যান। পরে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত লংগদু উপজেলার সোনাই প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বরকলের গোরস্থান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর থেকে সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।
‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ এ কে এম মকছুদ আহমেদ’ নামে একটি বই আছে তাকে নিয়ে।