চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এক মেম্বারের বিরুদ্ধে মামলা তুলে না নিলে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুমকিদাতা মোরশেদ নলুয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোরশেদ আলম। তার বিরুদ্ধে মামলা করায় স্থানীয় মো. ফারুককে এ হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। এ বিষয়ে থানায় জিডি করেছেন ফারুকের স্ত্রী শাহিনা আকতার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই মোরশেদ মেম্বারের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে মো. ফারুকের দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ফারুকের স্ত্রী শাহিনা আকতার বাদি হয়ে ২৫ জুলাই সাতকানিয়া থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। হামলায় গুরুতর আহত ফারুক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলেও ফারুক এখনো শয্যাশায়ী। ভাঙা পা দুটি পুরোপুরি ভালো হতে কয়েক মাস লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে বাড়িতেই তার চিকিৎসা চলছে। এরই মধ্যে মোরশেদ মেম্বার ওঠেপড়ে লেগেছেন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। বিভিন্নজনের মাধ্যমে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন। সর্বশেষ ১৩ আগস্ট ফারুকের ভাই নুরুর মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ সময় মোরশেদ মামলা তুলে না নিলে ফারুককে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। বিষয়টি উল্লেখ করে সাতকানিয়া থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন ফারুকের স্ত্রী।
মো. ফারুক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি আগে মোরশেদ মেম্বারদের সাথে চলাফেরা করতাম। তারা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। তারা এসব কাজে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে উৎসাহ যোগাতো। মাদক সেবনেও বাধ্য করতেন। পরবর্তীতে আমি তাদের এসব অন্যায় কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে নিই। কৌশলে তাদের সঙ্গ ত্যাগ করে চলতে থাকি। মূলত এতেই তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিতে থেকে তাদের দলে ভেড়ানোর জন্য। এতেও সাড়া না পেয়ে তারা আমার ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। হামলা করে দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়।’
ফা্রুক বলেন, ‘এখন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে বাড়িতে এসে হামলা করে মেরে ফেলায় হুমকি দিয়েছে মোরশেদ। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই প্রশাসনের কাছে।’
মোরশেদ মেম্বার আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। তার মামা কামাল উদ্দিন নলুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ফখরুদ্দিন মিন্টু যুবলীগ নেতা। এলাকায় তারা সন্ত্রাসী সহোদর হিসেবে পরিচিত। মিন্টু-কামালের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কেএম আব্বাস, হোসাইন, রহিম, কামাল, শিবির নেতা হামিদ, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. মহিউদ্দিন, ফারুকসহ আরও অসংখ্য মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু এলাকায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পান না। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তারা গা ঢাকা দিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
সাতকানিয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।