মাঝ সাগরে চবি শিক্ষার্থীদের বেদম মার, টেকনাফে এসে আবার
শিক্ষকের মাথায় লাঠির আঘাত, কলার ধরেছে আরেকজনের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে টেকনাফে ফেরার পথে পর পর দুই দফা হামলার শিকার হয়েছেন বে ক্রুজ-১ নামের এক জাহাজের কর্মীদের হাতে। এর মধ্যে শুরুতে মাঝ সাগরে এবং পরে দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছানোর পর এই দুই দফা হামলা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার পর এসব ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের ৭৫ জন শিক্ষার্থী মিলে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যান। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সেখান থেকে ফেরার সময় মাঝপথে এসে নির্ধারিত আসন থেকে এই শিক্ষার্থীদের জোর করে তুলে দেন জাহাজে দায়িত্বরত কর্মীরা। শিক্ষার্থীরা এ সময় এভাবে তাদের তুলে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে ওই কর্মচারীরা। এ সময় তাদের মারধরে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
নির্যাতনের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাখাওয়াত আলী বলেন, ‘আমরা সেন্টমার্টিন ট্যুর থেকে ফেরার পথে জাহাজের প্রথম সারির ৫০টা সিট বরাদ্দ করি। আমাদের অর্থনীতি বিভাগের লেকচারার আফতাব হোসেন স্যার প্রথমে বসে ছিলেন। হঠাৎ জাহাজের একজন স্টাফ এসে স্যারকে কলার ধরে সিট থেকে তুলে দিলেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন এ ঘটনা শুনি, সেই স্টাফকে জিজ্ঞেস করতে গেলাম। তখন ওই স্টাফ দৌড়ে ওপরে উঠে গেলেন। যখন বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা গেলাম, আমাদের লাঠি নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু হল। পরবর্তীতে আমরা জাহাজের ক্যাপ্টেনকে জানালাম। ক্যাপ্টেন আমাদের জানান, জাহাজ তীরে আসলে তখন তারা একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু ওনার সাথে আর্গুমেন্ট চলার একপর্যায়ে ৪-৫ জন স্টাফ লাঠি নিয়ে আমাদের এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করে।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ফজলে রাব্বি স্যারকে লাঠি দিয়ে তারা মাথায় আঘাত করে। আমাকে, হৃদয় সাহা, সুহা, ইসফাক উদ্দীন অভি, বাবরসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে মারধর করে তারা। তার মধ্যে আমাদের ক্লাসমেট দুইটা মেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে। এরপর প্রশাসক এসে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং আমাদের বলেন আমরা সুস্থ বিচার পাব।’
মারধরের শিকার অপর এক ছাত্রী বলেন, ‘সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে জাহাজে চবির ছাত্রছাত্রীদের লাঠি দিয়ে মারধর করে জাহাজের স্টাফরা। শিক্ষকরা তাদের বাঁচাতে গেলে শিক্ষকদেরকেও মারধর করে। বাধা দিয়ে গিয়ে আমাকেও মারধর করতে থাকে। নিজেকে বাঁচতে গিয়ে তাদের লাথি মার। এক পর্যায়ে তারা দুর্বল হয়ে পড়ে গেলে তাকে লাঠি দিয়ে মারতে গেছি। তখন সে দৌড়ে চলে গেছে। বাইরে দাড়ানো স্টাফরা আর ভেতরে প্রবেশ করতে পারে নাই।’
আরএ/সিপি