মশা দমন করতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে শত শত কোটি টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব উদ্যোগে কার্যকর ফল মেলেনি। এবার নতুন কৌশলে মশা দমন করতে চায় সিটি কর্পোরেশন। কৌশলের অংশ হিসেবে মশা মারতে ‘ড্রোন’ ব্যবহার শুরু করেছে সেবা সংস্থাটি।
রোববার (৯ জুলাই) সিটি কর্পোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী মশা খুঁজতে ড্রোন ব্যবহার কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে হাস্যরস। ড্রোন কার্যক্রম পরিণত হয় ‘টক অফ দ্যা সিটি’। নানা শ্রেণির মানুষ ড্রোন নিয়ে কড়া সমালোচনাও করেছেন।
নতুন এই উদ্যোগকে ‘ধান্ধাবাজি’ বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে। অপর এক ব্যক্তিতো সিটি কর্পোরেশন মেয়রের সুস্থতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। সচেতন মহল বলছে, এই উদ্যোগে ভালো ফল মিলবে না। শুধু টাকাগুলো অপচয় হবে।
ইকবাল হাসান নামে একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, ‘এইগুলা করে মাননীয় মেয়র সাহেব নিজেকে হাসির পাত্র বানাচ্ছেন। আর অন্যদিকে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করতেছে। যার দায়ভার মেয়র মহোদয় এড়াতে পারেন না।’
আহসান রেজা নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘এমনিতে চোখে মশা দেখা যায় না, মারা তো দূরের কথা। আবার এই কি মসিবত ড্রোন দিয়ে মশা দেখতেছে (হাসির ইমোজি)।’
অপর আরেকজন মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হেতেরে থামা। টেয়ার হোন মাইত্তো চাইলে হেলিকপ্টার ভাড়া করি নগরীর বেক বাসার উপরদি ঘুরতো ক, লগে এগ্গা দুরবিন দিছ, উপর তুন মশা পরিষ্কার দেখা যায়। (তাকে থামা। টাকার…চাইলে হেলিকপ্টার ভাড়া করে নগরীর সব বাসার ওপরে ঘুরতে, সঙ্গে একটা দূরবিন দিও, ওপর থেকে মশা পরিষ্কার দেখা যায়।)
চট্টগ্রামের এক আঞ্চলিক পত্রিকার ফেসবুক পোস্টে একজন লিখেছেন, ‘চট্টগ্রামের মেয়র সুস্থ আছেন তো?’
মো. ইকবাল হোসেন নামে একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন,‘ কত নাটক দেখব’।
মেয়রের ড্রোন উড়ানোর ছবিতে মো. মফিজ নামের আরেকজন লেখেন, ‘সব ধান্দাবাজ’।
এদিকে দিনেও মশার অসহনীয় উৎপাত চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার নিত্যদিনের দৃশ্য। মশার অত্যাচারে অতিষ্ট নগরবাসী। সম্প্রতি মহানগর এলাকায় মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে আশঙ্ক্ষাজনক হারে। মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না নগরবাসী।
সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেক বলা হয়, ড্রোনের মাধ্যমে নগরীর বহুতল ভবনগুলোর ছাদবাগানে কোনো মশা বাসা বেঁধেছে কিনা তা জানা যাবে। যদি মশার বংশবৃদ্ধির মতো পরিবেশ থেকে থাকে তবে সেখানে ওষুধ ছিটানো হবে। মশা খুঁজতে চসিক ‘ডিজেআই ম্যাভিক এয়ার এস২’ মডেলের ড্রোন ব্যবহার করছে। এটার ওজন ৫৯৫ গ্রাম। ড্রোনে আছে ৪৮ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা। মাটি থেকে ১০০ মিটার উঁচুতে উঠে ছবি বা ভিডিও করা যাবে এই ড্রোন দিয়ে।
এছাড়া যিনি ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ করবেন তার চতুর্পাশে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে সক্ষম এই ড্রোন। ড্রোনটির জন্য প্রতিদিন সিটি কর্পোরেশনকে ৫ হাজার টাকা ভাড়া গুণতে হবে।
আরএম/ডিজে