মন্ত্রী নওফেল মেডিকেল ছাড়তেই তার অনুসারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সন্ত্রাসীরা

নেপথ্যে ইন্ধন দুই নেতার

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও কোতোয়ালী আসনের সাংসদ মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চমেক হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়াকে কেন্দ্র করেই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রীর হাসপাতাল পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে আ জ ম নাছির উদ্দিন ও ডা. ফয়সাল ইকবালের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ নওফেল অনুসারীদের। এর আগেও শিক্ষা উপমন্ত্রী চমেক হাসপাতালে গেলে একইভাবে মন্ত্রীকে বিব্রত করেছিল আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীরা।

রোববারের এই হামলায় দুই পক্ষের ১২ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন দুই পক্ষের নেতারা। নওফেলের অনুসারীদের মধ্যে ৭ জন ও আ জ ম নাছির উদ্দিন অনুসারীদের পক্ষ থেকে তাদের ৫ জন কর্মী আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া সংঘর্ষের বিষটি নিশ্চিত করে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমন শিকদার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের লিডার হাসপাতাল পরিদর্শনে আসছেন শুনে আমরা ৭-৮ জন মিলে হাসপাতালে যাই নেতাকে রিসিভ করতে। সেখানে গিয়ে দেখি মেয়র মহোদয়ের অনুসারী ৩০-৩৫ জন আগে থেকেই সেখানে আছেন। তারা শুরুতে আমাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে। পরে নেতা চলে যাওয়ার পর অতর্কিতভাবে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত ছিল। আগেও শিক্ষা উপমন্ত্রী হাসপাতালে এলে তারা একই রকম ঘটনা ঘটিয়েছিল।’

এই হামলায় আরও যারা আহত হয়েছেন, তারা হলেন ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী খোরশেদ বিন মেহেদী, ৬০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অভিজিৎ দাশ, কনক দেবনাথ, ফাহাদুল ইসলাম, হোজাইফা বিন কবির, ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজেদুল ইসলাম হৃদয় ও মিনহাজ রহমান।

অন্যদিকে আজম নাছির উদ্দিনের অনুসারী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘আমাদের ৫৭ তম ব্যাচের যেসকল ছাত্র চিকিৎসক হয়েছেন তাদের শপথ অনুষ্ঠান ছিল আজ। মন্ত্রী মহোদয় আসার পর আমাদের পক্ষ থেকে তাকে রিসিভ করা হয়। তবে দুঃখের বিষয় তিনি ইদানিং মেডিকেলে এলে উনার পিছনে সোহেল হত্যা, অস্ত্র মামলার আসামিসহ একাধিক মামলার আসামি ঘোরাফেরা করে।’

তিনি দাবি করেন, ‘মন্ত্রী চলে যাওয়ার পরে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঘিরে রেখে কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থী ও বহিরাগত সন্ত্রাসী আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ডা. ফয়সাল আহমেদ, সহ-সভাপতি ডা. নূর মোহাম্মদ তানজিম, ডা. মাসুম বিল্লাহ মাহি, শোয়েব আলী এবং মাহাদি হাশিম আহত হয়েছে।’

এর আগে গত বছরের ৩১ মার্চ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চমেক হাসপাতাল পরিদর্শনে গেলে তখন আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নওফেলের গাড়ি ঘিরে উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা তৈরির চেষ্টা করেছিল। ওই সময় মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন হাসপাতাল একটা চিকিৎসা সেবার জায়গা। আমরা চাই না কেউ এটাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করুক।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!