মন্ত্রী জাবেদের আগ্রহে স্বাধীনতা সাহিত্য পুরস্কারের নাম পাঠিয়েছিল ভূমি মন্ত্রণালয়
চলতি বছর সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়ে সমালোচনার মুখে আবার ফিরিয়ে নেওয়া সেই লেখক এসএম রইজ উদ্দিন আহম্মদের নাম প্রস্তাব করেছিল ভূমি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের আগ্রহে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রইজ উদ্দিনের নামটি পাঠানো হয়েছিল। পরে পুরস্কারের জন্য সরকার গঠিত কমিটি যাচাই ছাড়াই তাকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। একজন অখ্যাত ব্যক্তি এমন মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পাওয়ায় সমালোচনা ঝড় বয়ে গেলে রইজ উদ্দিনের নামটি বাদ দেওয়া হয়।
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার বা স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ এই পদক প্রদান করা হয়ে আসছে।
জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে ২০২০ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার ঘোষণার জন্য আগ্রহীদের কাছে আবেদন চেয়ে পাঠানো হয়। এই ঘোষণার পর ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ তার মন্ত্রণালয়ে যোগ্য কোনও প্রার্থী আছেন কিনা তা খুঁজে দেখতে বলেন সংশ্লিষ্টদের। তার আগ্রহে এ পুরস্কারের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম আহ্বান করেছিল ভূমি মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের অধীন ভূমি সংস্কার বোর্ডে কর্মরত লেখক এসএম রইজ উদ্দিন আহম্মদ তখন নিজেই স্বাধীনতা সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেন। খুলনা বিভাগীয় উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনারের পদে থাকা অবস্থায় গত ১৫ জানুয়ারি অবসরে যান তিনি। আবেদনপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয় ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে।
পরে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য সরকার গঠিত কমিটি রইজ উদ্দিনকে সাহিত্যে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত করে। স্বাধীনতা পদক ঘোষণার পরপরই অখ্যাত একজন লেখকের সাহিত্যে মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।
সমালোচনার মুখে গত ৯ মার্চ ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে রইজ উদ্দিনের নাম প্রত্যাহারের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ১২ মার্চ স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের তালিকা থেকে রইজ উদ্দিনের নাম প্রত্যাহার করে সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে সাহিত্য শাখায় রইজ উদ্দিনের বদলে নতুন কোনও নাম ঘোষণা করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে স্বাধীনতা পদকের জন্য আগ্রহীদের কাছে আমরা আবেদনপত্র চেয়েছিলাম। রইজ উদ্দিন এই পদকের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করেন। আমরা তার আবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের তালিকায় তার নাম থাকায় বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হতে থাকে। এ কারণে আমরা তার নাম প্রত্যাহারের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠাই।’
সিপি