মন্ত্রিসভায় চট্টগ্রামের কারা আসছেন, আলোচনায় নতুন দুই মুখ

উত্তরের এক এমপি হতে পারেন হুইপ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই চট্টগ্রাম থেকে মন্ত্রিপরিষদে কারা স্থান পাচ্ছেন—তা নিয়ে সরগরম রাজনীতির মাঠ। চট্টগ্রামের তিন পুরাতন মন্ত্রীর সঙ্গে এবার আরও দুই নতুন মুখ স্থান পেতে পারেন মন্ত্রিপরিষদে— বলাবলি হচ্ছে এমনও। একইসঙ্গে চট্টগ্রামের সংরক্ষিত আসনের একজন ও উত্তর জেলার এক এমপিও পেতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়ার পরদিনেই নতুন মন্ত্রিপরিষদের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে চলছে নানা গুঞ্জন। চট্টগ্রামের একাদশ সংসদের তিন মন্ত্রীরা বহাল থাকবেন, না-কি কাটাছেঁড়ায় বাদ যাবেন—এসব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে নতুন মুখ মন্ত্রিপরিষদে স্থান পাবে বলেও আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

গত মন্ত্রিপরিষদে চট্টগ্রামের ১৬টি আসন থেকে তিনজন মন্ত্রী ছিলেন। তারা হলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছা্ন মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

বহাল থাকবেন তিন মন্ত্রী?

একাদশ জাতীয় সংসদে চট্টগ্রামের তিন মন্ত্রীই ছিলেন দাপুটে। এবারও তারা মন্ত্রিপরিষদে থাকবেন বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। আবার কেউ কেউ বলছেন, চট্টগ্রামের অন্তত একজন মন্ত্রী রাজনৈতিক সমীকরণে এবার বাদ যেতে পারেন।

তবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এখন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন। তিনি এবারে অনায়াসে মন্ত্রিপরিষদে থাকছেন বলেই ধরে নেওয়া যায়।

অন্যদিকে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদও মন্ত্রণালয় পরিচালনায় দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা উদ্যোগ নিয়ে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। অনেকে বলছেন, মন্ত্রিপরিষদে এবার তিনি থাকবেন—সেটি এখন সময়ের ব্যাপার। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে জাবেদ। ২০১২ সালে আখতারুজ্জামান বাবুর মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে আনোয়ারা (চট্টগ্রাম-১৩) আসন থেকে সংসদ সদস্য হন জাবেদ। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের পর সর্বশেষ নির্বাচনেও জয় পান তিনি।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিনবারের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বড় ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ২০১৭ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পরের বছরে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসন থেকে নির্বাচিত হন নওফেল। এরপর শিক্ষা উপমন্ত্রী হন তিনি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র হওয়ার সুবাদে ২০১৮ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিপরিষদে স্থান করে নেন তিনি। এবারও মন্ত্রিপরিষদে তিনি জায়গা পাবেন বলে আশা করছেন তার কর্মীরা।

রুহেল-সনির সম্ভাবনা

মিরসরাই (চট্টগ্রাম-১) আসন থেকে এবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মাহবুব উর রহমান রুহেল। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফপুত্র রুহেল এবার মন্ত্রিপরিষদে স্থান পাবেন বলে জোর গুঞ্জন উঠেছে। মন্ত্রিপরিষদে তরুণ ও প্রবীণদের সমন্বয়ে হলে রুহেলের সম্ভাবনাও রয়েছে।

এবিষয়ে মিরসরাইয়ের সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমান রুহেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। মিরসরাইবাসীর জন্য কাজ করতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার সম্পর্কে জানেন। তিনি যদি আমাকে যোগ্য মনে করে কোনো দায়িত্ব দেন, তা পালন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’

এদিকে ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম-২) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। তার পিতা রফিকুল আনোয়ার দুইবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। একাদশ সংসদেও সংরক্ষিত আসনে এমপি ছিলেন সনি। এবার নৌকার প্রতীকে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। সবমিলিয়ে তিনি মন্ত্রিপরিষদেও স্থান করে নিলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

এছাড়া চট্টগ্রামের প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে ওয়াসিকা আয়েশা খান মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই পাবেন বলেও গুঞ্জন উঠেছে। একইসঙ্গে রাউজান থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ফজলে করিম চৌধুরী জাতীয় সংসদের হুইপ হতে পারেন—এমনটাও শোনা যাচ্ছে রাজনীতিপাড়ায়।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm