‘মনগড়া খবর’— বলছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম প্রতিদিনের বক্তব্য

চবিতে অসমাপ্ত পরীক্ষা নিয়ে লুকোচুরি

দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অনলাইন সংস্করণে গত ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অসমাপ্ত পরীক্ষা নিয়ে ছেলে ভোলানা খেলা— পরীক্ষার উদ্যোগ নেই একসপ্তাহেও, শিক্ষার্থীরা হতাশ’ শীর্ষক সংবাদটির প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়।

বুধবার (২৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর এসএম মনিরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এই দাবি করা হয়েছে।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘২৩ নভেম্বর ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’-এ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অসমাপ্ত পরীক্ষা নিয়ে ছেলে ভোলানা খেলা— পরীক্ষার উদ্যোগ নেই একসপ্তাহেও, শিক্ষার্থীরা হতাশ’ শীর্ষক সংবাদটির প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের মহামারীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ায় সরকারের নির্দেশে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাডমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যেও শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন ক্লাশ চালু করেছে। এ ছাড়াও সকল শিক্ষার্থী যাতে অনলাইন ক্লাশে অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য প্রতিজন শিক্ষার্থীকে প্রতিমাসে ফ্রি ১৫ জিবি ডাটা প্রদান করেছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবচনা করে তাদের বিভিন্ন বর্ষের অসমাপ্ত পরীক্ষা দ্রুত নেবার জন্য গত ১৫ নভেম্বর একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অসমাপ্ত পরীক্ষা দ্রুত শেষ করার বিষয়ে একটি কমিটি গঠনের ব্যাপারে একাডমিক কাউন্সিলের সভায় মাননীয় উপাচার্যকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সে মোতাবেক মাননীয় উপাচার্য ইতামধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটি সভার সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এর ভিত্তিতে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনুষদের সম্মানিত ডিনবৃন্দ স্ব স্ব অনুষদের বিভাগীয় সভাপতি ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দের সাথে আলোচনা করে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। স্ব স্ব অনুষদের বিভাগীয় সভাপতি ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

প্রতিবাদলিপিতে দাবি করা হয়, ‘চবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যথাসময়ে শেষ করার ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। এখানে অসমাপ্ত পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপার ভুল বোঝাবুঝি ও বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নাই। প্রতিবেদক সংবাদে ‘শুভংকরর ফাঁকি’ বলে মুখরোচক ও মনগড়া যে প্রতিবেদন ছাপিয়েছেন তা নিতান্তই আপত্তিকর। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ জাতীয় শব্দ ব্যবহার করা প্রতিবেদক পক্ষান্তরে নিজকে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে খাটো করেছেন। যা অনভিপ্রেত এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। ভবিষ্যতে এ ধরনের আপত্তিকর শব্দের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আরও সচেতন হবার আহবান জানানো যাচ্ছে এবং এ ব্যাপার আপনাকে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে।’

প্রতিবেদকের বক্তব্য
প্রতিবেদনে উল্লেখিত একটি শব্দও মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। প্রতিবেদনটিতে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগে কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হয়েছে চট্টগ্রাম প্রতিদিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তার বক্তব্যেও জানিয়েছিলেন কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে উপাচার্য ডিনদের সাথে কথা বলে একটি মৌখিক নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। শিক্ষার্থীরা আগামী ৮-১০ দিনের একটা অগ্রগতি দেখতে পাবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সবশেষ অনুসন্ধানেও একাধিক ডিন নিশ্চিত করেছেন তারা কমিটির বিষয়ে কিছু জানেন না।

অন্যদিকে যে শব্দচয়নের বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে সেটা প্রতিবেদকের নিজস্ব চয়নকৃত শব্দ নয়। একজন শিক্ষার্থীর বক্তব্যে তা প্রকাশ পেয়েছে। প্রতিবেদক অনুলিখন করেছে মাত্র।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!