মধ্যরাত থেকে ধর্মঘটে যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের নৌযান শ্রমিকরা

১১ দফা দাবিতে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচি চলবে। এমনকি সিদ্ধান্ত রয়েছে, ইতিমধ্যে যেসব নৌযান বিকালে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দিয়েছে, সেগুলো গন্তব্যে পৌঁছানোর পর নোঙর করা থাকবে।

শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবি হল— ১. বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধ করা। ২. ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান। ৩. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্য ভাতা প্রদান। ৪. সব নৌযান শ্রমিকদের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ। ৫. এনডোর্স, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। ৬. কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ। ৭. প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান। ৮. নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন। ৯. মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও সনদ নবায়ন, বেআইনি নৌ চলাচল বন্ধ করা। ১০. নৌপরিবহন অধিদফতরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ১১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহ আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘২০১৮ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তারা তিনবার ধর্মঘটে গেছেন। প্রতিবারই শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করানো হয়। পরে মালিকরা দাবি মেনে নেননি। এবারও ধর্মঘট বন্ধ করতে বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সভা হয়। সেখানে অয়েল ট্যাঙ্কার মালিক ছাড়া অন্য নৌযানের মালিক প্রতিনিধিরা আসেননি। কোনও সমাধান হয়নি। আমরা ২৮ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। হঠাৎ করে ধর্মঘটে আসিনি।’

শাহ আলম ভূঁইয়া জানান, বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ফেডারেশনভুক্ত সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা হয়েছে। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাত্রীবাহীসহ সব নৌযানের মালিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতি ছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনও ধরনের বৈঠক হবে না। কোনও আশ্বাসও শ্রমিকরা মানবেন না।

বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা এর আগে দুই দফায় ধর্মঘট পালন করেছি। তখন আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু একটি দাবিও পূরণ হয়নি। তাই আমরা আবারও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। ধর্মঘটে সারাদেশের সব ধরনের নৌযান বন্ধ থাকবে।’

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের দফতর সম্পাদক প্রকাশ দত্ত বলেন, ‘নৌযান মালিক ও সরকার বারবার আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলে মেনে নেন, কিন্তু বাস্তবায়ন করেন না। গত জুলাইয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করার পর সরকার ও মালিকদের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হলো, দাবি মানা হবে। কিন্তু তারা ওয়াদা ভঙ্গ করেছে, তাই ধর্মঘটে বাধ্য হয়েছি। এবার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার করবো না।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!