শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে শেষ হয়ে যাচ্ছে চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৮ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী প্রচারণা। রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোটযুদ্ধ। তাই শেষ মুহুর্তে প্রচারণায় ব্যস্ত দিন পার করছেন চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন শুক্রবার হওয়ায় প্রার্থীদের ব্যস্ততাও বেড়ে গেছে অনেক। অনেকটা শেষ মুহুর্তে এসে জমে উঠেছে চকরিয়া উপজেলার ৮ ইউপি নির্বাচনের প্রচারণা।
২৬ ডিসেম্বর উপজেলার আটটি ইউনিয়ন হারবাং, বরইতলী, সুরাজপুর-মানিকপুর, বমুবিলছড়ি, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, ফাঁসিয়াখালী ও চিরিংগা ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সুরাজপুর-মানকিপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আজিমুল হক আজিম বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ কারণে ওই ইউনিয়নে শুধুমাত্র সাধারণ মেম্বার ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্য সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন, সাধারণ মেম্বার পদে ৩০৫ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে ১০২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এই ৮টি ইউনিয়নে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৪৮ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৮ হাজার ৮৬৩ জন এবং মহিলা ভোটার রয়েছেন ৬২ হাজার ৭৮৫ জন।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময়ে যাতে এলাকায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও টহল জোরদার করেছে। মাঠে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত-উদ-জ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অপরদিকে নির্বাচনের শেষ সময়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজার-চায়ের দোকানে আড্ডা জমে উঠেছে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে নানা ধরনের যুক্তিতর্ক তুলে ধরছেন। তবে সব ভোটারদের একটিই কথা— যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার নির্বাচিত হোক। অনেক ভোটার প্রতীকের চেয়ে প্রার্থীকে বিবেচনায় রাখছেন।
উপজেলার অন্য ৭ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে লড়ছেন। এই নির্বাচনে প্রচারণা চলাকালে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া না গেলেও সরকারদলীয় প্রার্থীরা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন বলে অভিযোগও উঠেছে।
এলাকায় যারাই বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছে, তাদেরকে সরকারি দলীয় প্রার্থীর লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। আবার কিছু কিছু ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে পরোক্ষভাবে নির্বাচন করছেন সরকারি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তবে সব মিলিয়ে ভোটারদের আশা, রোববার (২৬ ডিসেম্বর) একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে প্রশাসন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আমরা পাইনি। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহুর্তে যাতে কোন ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরা কাজ করবে।
সিপি