ভোররাতে চট্টগ্রাম ও ঢাকা অভিমুখী দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ‘তুর্ণা নিশীথা’র সঙ্গে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন ১৬ জন। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার চার ঘন্টা পর ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তুর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টা ৫৩ মিনিটে কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পরপরই ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম-সিলেটের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

আকস্মিক এই দুর্ঘটনায় দুটি ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এসব বগির নিচে আরও মরদেহ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভোররাতে চট্টগ্রাম ও ঢাকা অভিমুখী দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১৬ 1

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ‘তুর্ণা নিশীথা’ ট্রেনটিকে সাইড দিতে গিয়ে উদয়নের অর্ধেক বগি অন্য লাইনে ঢোকার পর বাকি বগিগুলোতে ‘তুর্ণা নিশীথা’ ধাক্কা লাগে। এতে মুহূর্তেই দুটি বগি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ৭২৪ উদয়ন এক্সপ্রেস-২৯৩৪ মন্দবাগ লুপ লাইনে প্রবেশকালে ঢাকা অভিমুখী ৭৪১ তুর্ণা এক্সপ্রেস-২৯২৩ বিপরীত দিক থেকে এসে সংঘর্ষ ঘটায়। এতে উদয়নের অন্তত দুটি কোচ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভোররাতে চট্টগ্রাম ও ঢাকা অভিমুখী দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১৬ 2

ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের মুজিবুল রহমান (৫৫), হবিগঞ্জের ভোল্লার ইয়াছিন আরাফাত (১২), চুনারুরঘাটের তিরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), মৌলভীবাজারের জাহেদা খাতুন (৩০), চাঁদপুরের কুলসুম বেগম (৩০), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল-আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), হবিগঞ্জের বানিচংয়ের আদিবা (২), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সোহামনি (৩), চাঁদপুরের উত্তর বালিয়ার ফারজানা (১৫), চাঁদপুরের হাইমচরের কাকলী (২০), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), চাঁদপুরের হাইমচরের মরিয়ম (৪), নোয়াখালীর মাইজদির রবি হরিজন (২৩), চাঁদপুর সদরের ফারজানা (১৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২)।

অন্যদিকে দুর্ঘটনায় আহত ৩৯ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর আগে আবার তিন জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ও সদর হাসপাতালে ১২ জন, আখাউড়ায় ২ জন এবং কসবা উপজেলা হাসপাতালে ২ জন ভর্তি রয়েছে বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় অধিবাসীরা ছাড়াও কসবা উপজেলা প্রশাসন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!