ভেজাল/ চট্টগ্রামের পাঁচটিসহ আরও ২২ পণ্য নিম্নমানের, তালিকায় প্রাণ-রাঁধুনিও

আট প্রতিষ্ঠানের পণ্যের তালিকা প্রকাশ করলো না বিএসটিআই

0

নিষিদ্ধঘোষিত ৫২টি পণ্যের সঙ্গে বাজারে বিক্রি হচ্ছিল বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের পাঁচটিসহ আরও ২২টি পণ্য। প্রথম দফায় ৫২টি পণ্যের পর দ্বিতীয় দফায় অবশিষ্ট ৯৩টি পণ্যের মধ্যে আরও ২২টি পণ্যের নমুনা নিম্নমানের পেয়েছে মান তদারককারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল, ১১টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত এবং আটটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স না থাকায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জভিত্তিক ড্যানিশ ফুডস লিমিটেড নামে অপর একটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স আগেই বাতিল করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বিক্রিত মালামাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নিম্নমানের আটটি প্রতিষ্ঠানের নাম ও পণ্যের নাম প্রকাশ করেনি বিএসটিআই।

মঙ্গলবার (১১ মে) বিএসটিআইয়ের পরিচালক (সিএম) প্রকৌশলী এসএম ইসহাক আলী স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, চট্টগ্রামের বন্দর থানাধীন গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের তিন নম্বর ফকিরহাট বাজারের থ্রি স্টার ফ্লাওয়ার মিলের থ্রি স্টার ব্রান্ডের হলুদের গুঁড়া ও ঢাকার এগ্রো অর্গানিক প্রোডাক্টের খুশবু ব্র্যান্ডের ঘি নিম্নমানের হওয়ায় কোম্পানি দুটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

s alam president – mobile

লাইসেন্স স্থগিত হওয়া প্রতিষ্ঠান ও ব্রান্ড
স্থগিত হওয়া প্রতিষ্ঠান ও ব্রান্ডের মধ্যে চট্টগ্রামের রয়েছে পাঁচটি। এগুলো হল চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন হামজারবাগের যমুনা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের এ-৭ ব্রান্ডের ঘি; চট্টগ্রামের রাজাখালীর আছি মিয়া রোডের কুইন কাউ ফুড প্রোডাক্টসের গ্রিন মাউন্টেন ব্রান্ডের বাটার অয়েল; চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডীর এসএ সল্টের মুসকান ব্রান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ; চট্টগ্রামের কনফিডেন্স সল্টের কনফিডেন্স ব্রান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ।
এছাড়া রয়েছে নরসিংদীর প্রাণ ডেইরির প্রাণ প্রিমিয়াম ব্রান্ডের ঘি; পাবনার স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের রাঁধুনী ব্রান্ডের ধনিয়া ও জিরার গুঁড়া; নারায়ণগঞ্জের হাসেম ফুডসের কুলসন ব্রান্ডের লাচ্ছা সেমাই; ঝালকাঠির জেকে ফুড প্রোডাক্টের মদিনা ব্রান্ডের লাচ্ছা সেমাই; চাঁদপুরের বিসমিল্লাহ সল্ট ফ্যাক্টরির উট ব্রান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ ও চাঁদপুরের জনতা সল্ট মিলসের নজরুল ব্রান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ।

এদিকে আরও আটটি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের কোনো লাইসেন্স ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করছিল। তাদের নাম প্রকাশ না করে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসটিআই।

বিএসটিআইয়ের ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পণ্যগুলোর মানোন্নয়ন করে পুনঃঅনুমোদন ব্যতিরেকে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের পণ্য বিক্রি-বিতরণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার হতে বিরত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বিক্রিত মালামাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়।

Yakub Group

বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বক্তব্য
জানতে চাইলে বিএসটিআই চট্টগ্রামের পরিচালক প্রকৌশলী মো. সেলিম রেজা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিভিন্ন পণ্যের মোট ৪০৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। আগে ৫২টি পণ্য নিম্নমানের পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে রিপোর্টে আরো ২২টি পণ্য নিম্নমানের পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল, কিছু স্থগিত ও কিছুর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’

নিম্নমানের ও লাইসেন্সবিহীন আটটি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ না করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ঢাকার মূল কার্যালয় থেকে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানা নেই।’

চট্টগ্রামের নিম্নমানের পাঁচটি পণ্যের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানতে চাইলে সেলিম রেজা বলেন, ‘তাদেরকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে বাজার থেকে তাদের পণ্য প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। না করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘বিএসটিআই আরো ২২টি পণ্যকে নিম্নমানের ঘোষণা করেছে। এ ব্যাপারে আমাদের অধিদপ্তর একটি অফিস আদেশ দেবে। কাল বৃহস্পতিবার অফিস আদেশটি আসতে পারে। আদেশ অনুসারে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

এমএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!