মোটা অংকের কমিশন পাওয়ার লোভে চট্টগ্রামের অগ্রণী ব্যাংকের আসাদগঞ্জ কর্পোরেট শাখার দুই কর্মকর্তার যোগসাজশে ১০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে আসাদগঞ্জের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যানকে।
এই দুই ব্যক্তি সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। ঋণের বিপরীতে ব্যাংককে দেওয়া বন্ধকী সম্পত্তির কয়েকগুণ মূল্য নির্ধারণ করে ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের দেওয়া সকল কাগজপত্রও ছিল জাল। এই জাল নথির উপর ভিত্তি করেই দেওয়া হয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা ঋণ। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শেষে অভিযুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফজলুল বারী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
এই মামলার আসামিরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জ শাখার সাবেক শাখার ব্যবস্থাপক এম মর্তুজা আলী চৌধুরী, তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব বড়ঘোনা গ্রামের মৃত ফজল করিম চৌধুরীর পুত্র। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জ শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার ও বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত) পলাশ রঞ্জন তালুকদার, তিনি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার কীর্ত্তনখোলা গ্রামের তালুকদার বাড়ির মৃত মৃনাল কান্তি তালুকদারের পুত্র।
এছাড়া চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার জামাল খান এলাকার ৯২ হেমসেন লেইনের মো. হাবিরের পুত্র মের্সাস জয়নাব ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মাহমুদ ও একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী মিসেস রায়ান পিয়েরা নাহাস।
দুদক সূত্রে জানা যায়, পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া কাজগপত্র সৃজন করে ঋণ দেওয়া হয়েছে মের্সাস জয়নাব ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এমডিকে।
সেখানে কর্মমূল্যের বন্ধকী সম্পত্তির অধিকমূল্য দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে ঋণ। জালিয়াতি করে ৯২ কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৪৬২ টাকা ব্যাংক থেকে গ্রহণ করে এসব অর্থ আত্মসাৎ করেন তারা। ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই ঋণের বিপরীতে সুদ সহ মোট ১৬৫ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ৩৪৭ দশমিক ৬৩ টাকা ব্যাংকের ক্ষতিসাধন করার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯, ৪২০, ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফজলুল বারী। তিনি বলেন- ‘আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
এএম/এমএফও