ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা সাইফুদ্দিন খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ভাষার জন্য রেখেছিলেন জীবনবাজি। দেশ স্বাধীনের জন্য নেমেছিলেন অস্ত্র হাতে যুদ্ধে। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে তাকে নির্মম অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিল শুধুমাত্র স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন বলেই। জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত সাম্যবাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনীতির সাথে তিনি ছিলেন সক্রিয়।

যার কথা বলছিলাম তিনি সাইফুদ্দিন খান। ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা তিনি। আজ (২৮ জুন) তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৭ সালের এই দিনে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।

চট্টগ্রামের এই সন্তানের বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান গ্রামে। জন্ম ১৯৩১ সালে।

সাইফুদ্দিন খান বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে চট্টগ্রামে থেকে নেতৃত্ব দেন। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন ও পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের চট্টগ্রাম শাখার প্রথম কমিটির সদস্য। রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হয়ে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৫৯ থেকে তাঁকে রাজনৈতিক কারণে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে তিনি রাজাকার আলবদর বাহিনীর টর্চার সেল ডালিম হোটেলে তিন সপ্তাহ ধরে তীব্র নির্যাতনের শিকার হন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

১৯৭১ সালে চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১৭ ডিসেম্বর তিনি চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে তিনি সাম্যবাদী অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলেন।

১৯৭৫ সালে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর তিনি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেন। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দেন।

চার দলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ১৪ দলীয় মোর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য সভাপতি পদে আসীন ছিলেন। তিনি মানবাধিকার নেত্রী নূরজাহান খান তাঁর সহধর্মিণী।

ভাষা সৈনিক সাইফুদ্দিন খানের ঘনিষ্ঠ সহচর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চট্টগ্রাম মহানগর সংগঠক অ্যালেক্স আলিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সাইফুদ্দিন খান মরোনোত্তর চক্ষু ও দেহ দান করেছিলেন। কিন্তু তিনি যখন মুক্তিযুদ্ধ শেষে মুক্তিপান তখন তার অবস্থা মুমূর্ষু। কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়ে তার শারিরীক অবস্থার খুব খারাপ হয়ে পড়েছিল। যার কারণে তার মরদেহ মেডিকেলে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!