ভিডিও/ ভালো নেই ‘মোহছেন আউলিয়া’র শিমুল শীল

চট্টগ্রাম প্রতিদিন বৈঠকী

ভারতের বেঙ্গালুরু নারায়না হাসপাতালে হার্টের বাইপাস সার্জারি করে চট্টগ্রামের জনপ্রিয় মরমী কন্ঠশিল্পী শিমুল শীল দেশে ফিরলেন কদিন আগে। গত ১৭ জুন তার সার্জারি হয়। প্রায় আট বছর ধরে তিনি ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টসহ হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন।

বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত এই শিল্পী গত চার দশক ধরে সুরের ভুবনে ভক্তদের অসংখ্য মরমী গান উপহার দেন। তিনি সুস্থ হয়ে আবারও গানের জগতে ফিরে আসার আকাঙ্খা ব্যক্ত করে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। ছয় মাস সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। আমি সকলের কাছে দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করছি।’

চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার পাঁচপুকুরিয়া গ্রামে দরিদ্র পরিবারে শিমুল শীলের জন্ম। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। এ পর্যন্ত অডিওবাজারে শিমুল শীলের প্রায় ২০০টি গানের অ্যালবাম রয়েছে। যদিও মোহছেন আউলিয়াকেন্দ্রিক গানের মাধ্যমেই তার যতো সফলতা।

চট্টগ্রাম প্রতিদিন কার্যালয়ে এক বৈঠকে এসে মরমী গানের জনপ্রিয় এই শিল্পী জানালেন তার শৈশব-কৈশোরের কথা। বেদনাময় জীবনের আবেগময় নানা কথা। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হলেন শিমুল শীল—‌‘কঠিন বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছি। ১০ সদস্যের সংসারে বাবার রোজগার ছিল দিন এনে দিনে খাওয়ার মত। অতীত মনে পড়লে নীরবে-নিভৃতে সবার অগোচরে আজও কান্না করি। অভাব ও অনটন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী৤’

বললেন, ‘এমনও দিন গেছে দুবেলা দুমুঠো খাবারও জোটেনি ভাগ্যে। পাঁচবার হালদার ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়েছি। প্রতিবেশীদের বাসায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর দিন কাটিয়েছি। গান শিখতে হারমোনিয়াম ছিল না। তাই মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি। গায়ে দেওয়ার মত একটা ভাল শার্ট-প্যান্ট ছিল না। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শার্ট নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতাম।’

শৈশব থেকেই গান ভালোবাসতেন শিমুল শীল। আর্যসঙ্গীতে মনোহরী বড়ুয়া, প্রিয়তোষ বৈদ্য, সুকুমার শীল, স্বপন কুমার দাশ, ঝিনি দাশ, সঞ্জিত খাস্তগীর, অশোক খাস্তগীর, বিষু আচাযের্র কাছ থেকে সঙ্গীতের তালিম নিয়েছেন শিমুল শীল।

শিমুল শীল বললেন, ‘যে সকল গীতিকার ও সুরকারের কারণে আজ আমি শিমুল শীল তাদের মধ্যে আব্দুল গফুর হালি, এমএন আখতার, নুরুল আলম ও দুদু চৌধুরীর অবদান সবচেয়ে বেশি।’

কবি গান, আঞ্চলিক গান, মোহছেন আউলিয়ার গান, মাইজভাণ্ডারী গান অর্থাৎ মরমী সঙ্গীতকে লোকসংস্কৃতির একটি অংশ মনে করেন তিনি।

শিমুল শীল তার সকল ভক্ত ও অনুরাগীদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সঙ্গীত আমার জীবন। আমি সঙ্গীতকে আপন করে বেঁচে থাকতে চাই। মানুষের ভালোবাসা আমার পরম সম্পদ। সবাই আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!