ভারতের কাছে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের, শেষ মুহূর্তের গোলে শিরোপা হাতছাড়া
সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ
ভারতকে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ নেয়ার লড়াইয়ে নামার ২৩ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের মো. হৃদয়। একই সময় লাল কার্ড পান ভারতের গুরকিরাত সিংও। একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে দুই দলের খেলোয়াড়রা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লে এই দুইজনকে লাল কার্ড দেখানোর পাশাপাশি দু’দলের আরো দু’জনকে হলুদ কার্ড দেখান নেপালি রেফারি কাবিন বানজানকার। ১১ জনের মাঠের লড়াই পরিণত হয় ১০ জনের লড়াইয়ে। ৪০ মিনিটের মাথায় বাংলাদেশ দল পরিণত হয় ৯ জনে। কর্নার থেকে আসা বল আমির হাকিম বাপ্পী ব্যাকভলি করলে সে বলে বাঁ-পায়ের প্লেসিংয়ে গোল করেন অধিনায়ক ইয়াছিন আরাফাত। বাংলাদেশ ফিরে সমতায় আর গোল উদযাপনে জার্সি খুলে ইয়াছিন দেখেন হলুদ কার্ড। এর আগে ১৭ মিনিটেও অধিনায়ক হলুদ কার্ড পেয়েছিলেন। দুই হলুদ কার্ডে মাঠ ছাড়তে হয়েছে অধিনায়ককে। বাংলাদেশ পরিণত হয় ৯ জনের দলে।
ভারতের ১০ জনের সঙ্গে ৯ জনের বাংলাদেশ লড়লো শেষ ৫০ মিনিট। কখনো মনে হয়নি বাংলাদেশ এক খেলোয়াড় কম নিয়ে খেলছে। গোলের সুযোগও পেয়েছিল; কিন্তু সেই ম্যাচ বাংলাদেশ হারলো ইনজুরি সময়ে গোল হজম করে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপের তীব্র উত্তজনাকর ফাইনালে বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের নতুন চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। প্রথমার্ধের খেলা ছিল ১-১।
ড্রয়ের পথেই ছিল লড়াই। মনে হচ্ছিল অতিরিক্ত সময়ে যাবে খেলা। হয়তো টাইব্রেকার ভাগ্যেই উত্তর মিলবে কারা সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ চ্যাম্পিয়ন? কিন্তু না, ইনজুরি সময়ে এসে সর্বনাশ। খেলার ১১তম মিনিটে বিক্রমের গোলে এগিয়ে যায় ভারত। এরপর ৪০তম মিনিটে বাংলাদেশের হয়ে সমতা ফেরান ইয়াসিন। এভাবেই শেষ হচ্ছিল লড়াই। কিন্তু খেলার ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটেই জয়সূচক গোল পেয়ে যায় ভারত।
খেলায় মেজাজ ধরে রাখতে পারেনি দুই দলের ফুটবলাররাই। বিশেষ করে ২১তম মিনিটে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে দুই দলের ফুটবলাররা জড়িয়ে পড়েন হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কিতে। শেষ অব্দি রেফারি ভারতের গুরকিরাত সিংকে সরাসরি লালকার্ড দেখান। আর দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশের মিডফিল্ডার মোহাম্মদ হৃদয়কে।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল খেয়ে বসে বাংলাদেশ। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে আসা বল ধরে বাংলাদেশের অধিনায়ক ইয়াছিন আরাফাতসহ দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে কোনাকুনি শটে গোল করেন ভারতের ফরোয়ার্ড বিক্রম। এরপর ৪০তম মিনিটে সমতায় ফিরলেও ভুল করে ফেলেন গোলদাতা ইয়াসিন আরাফাত। গোল উদযাপন করতে গিয়ে জার্সি দিয়ে মুখ ঢেকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তিনি। নয় জনের দল হয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর রক্ষণভাগ ঠিক রেখে খেলতে গিয়েই শেষ দিকে এসে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় দলটির।
এবারের আসরে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে মিশন শুরু হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের সঙ্গে ড্র করে সবার আগে পেয়ে যায় সেমি-ফাইনালের টিকিট। তবে ভারত ও বাংলাদেশের পয়েন্ট, গোল পার্থক্য সমান হওয়ায় গ্রুপ সেরা নির্ধারিত হয় লটারিতে। সেখানে ভারত গ্রুপ সেরা ও বাংলাদেশ হয় গ্রুপ রানার্স-আপ। লটারিতে ভুটানকে পেলেও জিততে এবারও বেগ পেতে হয়নি কিশোরদের। সেমিফাইনালে ভুটানকে হারায় ৪-০ গোলে। কিন্তু ফাইনালে এসে প্রত্যাশা পূরণ হলো না!