ভাঙা বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে পানি, আনোয়ারার ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দী

তিনদিন ধরে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানিতে ভাসছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া এলাকা। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে কয়েকশত ঘর। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৩ হাজার মানুষ। বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও।

যথা সময়ে বেড়িবাঁধের মাটির কাজ শেষ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। বারবার ঝড় জলোচ্ছ্বাসে জানমাল হারানো দেখেছি, অনেক শুনেছি, অনেক আশ্বাস ও পেয়েছি। দুর্নীতি অনিয়ম ছাড়া বাঁধ নির্মাণ হয়নি। ঝড় জলোচ্ছ্বাসে পানিতে ভেসে যাই বাঁধ। এভাবে আর কতদিন। ছেড়ে দিয়েছি বাঁধ নির্মাণের আশা। এভাবে যতদিন থাকা যায় পানির সাথে যুদ্ধ করে বাঁচতে হবে আমাদের। মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বার আউলিয়া এলাকার সাধারণ মানুষ এমনটাই অভিযোগ করে বলেন।

বার আউলিয়া বাইন্নাপাড়া, কবির মিয়ার বাড়ি, ইসমাইল মিয়াজির বাড়ি, সর্দার পাড়া, হাজী কেরামত আলী বাড়ি, মাওলানা আমির হামজার বাড়ি, হাজী বাদশা মিয়ার বাড়ি, কবির মিয়ার বাড়ি ও দক্ষিণ গহিরাসহ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের শতাধিক বসতঘর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানিতে পরুয়াপাড়া বাতিঘর, গহিরা, ফকির হাট ও সরেঙ্গার যেসব অংশে ব্লক নেই এসব এলাকার বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।জরুরিভিত্তিতে এসব বাঁধের ভাঙা অংশ দ্রুত সংস্কার না করলে যে কোনো মুহূর্তে তলিয়ে যাবে বেড়িবাঁধ।
ভাঙা বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে পানি, আনোয়ারার ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দী 1

প্রায় ৫৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে অনিয়মের কারণে রায়পুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া এলাকায় প্রায় ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে স্থানীয় বার আউলিয়া জামে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়ে। বার আউলিয়া এলাকায় খোলা বেড়িবাঁধ দিয়ে প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি উঠানামা করছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা শওকত হোসেন আকাশ বলেন, তিন দিন ধরে জোয়ারের পানিতে ভাসছে পুরো গ্রাম। আমাদের বাড়ি ঘর ডুবে গেছে, বাড়ির কারো পক্ষে রান্নাবান্না করাও সম্ভব হচ্ছে না। অনেক কষ্ট করে জীবন যাপন করেছি। এ অবস্থায় দ্রুত বাঁধ মেরামত ও সংস্কার করা না হলে এই এলাকা মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।

রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম বলেন, কয়েকদিন ধরে সাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হয়ে বার আউলিয়া এলাকার বেড়িবাঁধের খোলা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে মানুষের বাড়িঘর, মসজিদ মাদ্রাসা, কবরস্থান ও দোকানপাট তলিয়ে গেছে। এতে করে এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দ্রুত সংস্কার না করলে যে কোনো মূহূর্তে তলিয়ে যেতে পারে বেড়িবাঁধও।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী সৃজন চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া মেলেনি।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!