ভাগ্নের শূন্য চেয়ারে মামা ‘আমির’ হেফাজতে ইসলামের

হেফাজতে ইসলামের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া পদে ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় ডাকা এক বিশেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী সম্পর্কে প্রয়াত জুনায়েদ বাবুনগরীর মামা। গত ৭ জুন হেফাজতের ঘোষিত কমিটির ১৬ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। দলটি বিএনপি জোট ছাড়লে তিনি ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দেন। এর আগে আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতের কমিটিতে সিনিয়র নায়েবে আমির হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি ফটিকছড়ির আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরের মহাপরিচালক।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) বেলা ১২ টার দিকে হেফাজতে ইসলামের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী গুরুতর অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে মারা যান।

বাংলাদেশে নানা সময়ে আলোচিত হয়েছেন হেফাজতে ইসলামের এই নেতা। তিনি সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বে আসেন প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর। শফী নেতৃত্বে থাকার সময় হেফাজতে ইসলাম ২০১৩ সালে ঢাকার শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় আসে। তখন বাবুনগরী সংগঠনটির মহাসচিব ছিলেন। সেসময় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

এরপর এক পর্যায়ে সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে সরকারের সখ্য গড়ে উঠেছিল এবং তা অনেক ক্ষেত্রেই দৃশ্যমানও হয়েছিল। তবে শফীর মৃত্যুর ঘটনা এবং তারপর জুনায়েদ বাবুনগরীর সংগঠনটির নেতৃত্বের আসা নিয়ে হেফাজতে ইসলামের একটি অংশ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়। আহমদ শফীর পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ এনে একপর্যায়ে মামলাও করা হয়।

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন জুনায়েদ বাবুনগরী। অন্যদিকে জুনায়েদ বাবুনগরী যখন নেতৃত্বে আসেন, তখন সরকারের সাথে হেফাজতে ইসলামের একধরনের দূরত্ব তৈরি হয়। সংগঠনটির নেতাদের অনেকের বক্তব্যে বিভিন্ন সময় তা উঠে এসেছে। এ বছরের মার্চ মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের সময় হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক সহিংসতা হওয়ার পর সংগঠনটি সরকারের চাপের মুখে পড়ে।

নানা আলোচনা-বিতর্ক এবং সরকারের চাপের মুখে, হেফাজতের কমিটি একবার ভেঙে দিয়ে এডহক কমিটি করেছিলেন জুনায়েদ বাবুনগরী। এর মাসদুয়েক পর তিনি নিজে আমীর হয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!