ব্যবসায়ীকে হুমকি, লাখ টাকা দাবি এসআইয়ের!

সীতাকুণ্ড

‘নির্মাণকাজ করতে টাকা লাগবে। আপনার জায়গায় প্রতিপক্ষের আপত্তি আছে, এটি সমাধান করতে টাকা দিতে হবে। যদি সেখানে গ্যারেজ নির্মাণ করতে চান তাহলে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। না হয় আপনাকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে’— এভাবেই সফিকুল ইসলাম নামের ভুক্তভোগী এক ব্যবসায়ীকে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাইমুল ইসলাম।

হয়রানি ও অনৈতিকভাবে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগে এসআই কাইমুল ইসলামের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন সীতাকুণ্ডের মহাদেবপুর এলাকার ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম।

জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর বসতবাড়ির জন্য কেনা জায়গায় গ্যারেজ নির্মাণ করছিলেন সফিকুল ইসলাম। এতে প্রতিহিংসবশত নুর নাহার বেগম নামের এক নারী জায়গাটি তার দাবি করে থানায় অভিযোগ দেয় সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই কাইমুল ইসলামের। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিষয়টি সমাধানের জন্য জায়গার কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে থানায় আসতে বলেন দু’পক্ষকে। সেদিন সফিকুল ইসলাম থানায় উপস্থিত থাকলেও বাদী অনুপস্থিত ছিলেন। পরে সফিকুলের কাগজগুলো দেখে এসআই বলেন বিষয়টি পরে জানানো হবে।

গত ৫ ডিসেম্বর আবারও থানায় গিয়ে এসআই কাইমুলের কাছে সফিকুল জানতে চান তার জায়গায় কাজ করতে পারবে কিনা? উত্তরে তিনি বলেন কাজ করতে হলে টাকা দিতে হবে। কথা বলার একপর্যায়ে তিনি সফিকুলের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে কিছু না বলে সেখান থেকে ব্যবসায়ী সফিকুল চলে আসেন।

অভিযুক্ত সীতাকুণ্ড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাইমুল ইসলাম বলেন, ‘সফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবির বিষয়টি সত্য নয়। পুলিশের হট লাইন ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা থেকে আমি তদন্ত করতে মহাদেবপুর গিয়েছিলাম।’

ভুক্তভোগী সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মহাদেবপুর এলাকায় আমার ফটোকপির দোকান আছে। সেখানে আমার জায়গায় একটি গ্যারেজ নির্মাণ করতে চাইলে নুর নাহার বেগম নামের এক প্রতিবেশী থানায় নিজের জায়গা দাবি করে একটি অভিযোগ করেন। থানায় দু’পক্ষকে ডাকালে ওই নারী আসেন নি। পরে তদন্ত কর্মকর্তা কাইমুলকে বললাম আমাকে গ্যারেজ নির্মাণ করতে দিন। না হয় ওই নারীকে বলেন, সে যদি আমার কাছ থেকে জায়গা পায় তাহলে আদালতে মামলা করতে। এ কথা বলার পর এসআই বলেন, কাজ করতে চাইলে ১ লাখ টাকা দিন। এরপর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন এসআই কাইমুল ইসলাম।

এদিকে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, ‌‘কেউ তো এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে আসেনি। থানায় এলে বিষয়টি দেখতাম।’

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রতিদিন অনেকেই অভিযোগ করেন। কিন্তু এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি।’

মুআ/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!