বোনকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ভাইকে হত্যা, আসামি ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৪ জন

বোনকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার প্রতিবাদ করায় চট্টগ্রামের আকবরশাহে মো. শফিকুল রনি নামের ২৮ বছর বয়সী এক যুবককে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত শফিকুল রনি আমানত উল্লাহ শাহ পাড়ার বাল্লা মিয়ার ছেলে।

বুধবার (২৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টার দিকে উত্তর কাট্টলীর আমানত উল্লাহ শাহ পাড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে আকবর শাহ থানা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের পরিবার।

এ মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনের নামপরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন আকবর শাহ থানার ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল সিদ্দিকী, একই থানার জব্বার আলী সারেংবাড়ির বদিউল আলমের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মো. শহিদ, ফতেহ আহমদ চৌধুরীর নতুন বাড়ির আব্দুল মান্নান প্রকাশ মন্নাইয়ার ছেলে মো. শহীদ।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, ছোট বোনের উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা। তবে পুলিশ বলছেন, ময়নাতদন্তের রির্পোটের পর মামলার আসল রহস্য বের হয়ে আসবে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর কাট্টলী আমানত উল্লাহ শাহ পাড়ায় হায়দারের ভাড়া বাসায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে নিহত শফিকুল রনি। তার মা-বাবা ও ছোট বোনকে নিয়ে পাশের আরেকটি কলোনিতে থাকেন। রেশমীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল স্থানীয় বখাটে ছাত্রলীগ নেতা মো. শহীদ। বিষয়টি শফিকুল শুনলে তিনি বোনের কুু-প্রস্তাব বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদ করায় তারা শফিকুলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রেখেছে। এছাড়া রেশমীকে শহীদের কাছে বিয়ে দিতে চাপও প্রয়োগ করেন শহিদসহ আসামিরা।

নিহতের বোন রেশমী আক্তার বলেন, প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন রাত ৮টায় আমি দুই ভাইয়ের জন্য রাতের খাবার নিয়ে গেলে বড় ভাই শফিকুল রনির লাশ দেখতে পায়। তাৎক্ষনিক আমি ঘটনাটি সবাইকে জানালে তারা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে আমার ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে।

তিনি আরও বলেন, শহিদ একজন বখাটে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চলাচলের পথে আমাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিত। বাসা থেকে বের হলে শহীদের সহযোগীরা টিজ করত। ছাত্রলীগ নেতা শহিদকে প্রশ্রয় দিত আকবর শাহ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল সিদ্দিকীসহ আরও কয়েকজন। তারা আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আকবর শাহ থানা ওসি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল উত্তর কাট্টলীর আমানত উল্লাহ শাহ পাড়ায় শফিকুল রনি নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে চারজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা হয়নি।’

‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি এটি আত্মহত্যা। তারপরও ফরেনসিক রির্পোটের উপর নির্ভর করে হত্যা নাকি আত্মহত্যা তার প্রকৃত ঘটনার রহস্য। আগামী একসপ্তাহের মধ্যে ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেলে বুঝা যাবে আসল ঘটনা।’

মুআ/এসএস/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!