বেপরোয়া ফিনলে প্রপার্টিজ কাতালগঞ্জে পাহাড় কেটেই যাচ্ছে

২৯ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার প্রমাণ মিলেছে

জরিমানা, নিষেধাজ্ঞা, সতর্কতা— কোনো কিছুই তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্রে বারবার পাহাড় কাটছে ফিনলে প্রপার্টিজ লিমিটেড নামের একটি আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।

নগরীর কাতালগঞ্জ এলাকায় পাহাড় কাটার দায়ে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ১২ লাখ টাকা জরিমানার মুখে পড়ে ফিনলে প্রপার্টিজ। পাহাড় কেটে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই সেখানে ‘এমএন মেরী গোল্ড’ নামক ১৮ তলা বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ এবং পাহাড় কাটার অপরাধে জরিমানা করে ফিনলে প্রপার্টিজকে। ওই সময় ১২ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার দায়ে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার পরে পাহাড় কাটার পরিমাণ উল্টো দ্বিগুণ হারে বাড়িয়ে দেয় ফিনলে প্রপার্টিজ। এবার তারা পাহাড় কাটলো আরও ১৭ হাজার ঘনফুট। পরিবেশ অধিদপ্তর অপূরণীয় এই ক্ষতির দায়ে জরিমানা ধরে ১৭ লাখ টাকা। কইসাথে অবস্থানগত ছাড়পত্র বাতিল এবং ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধেরও নির্দেশ দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) শুনানি শেষে এ জরিমানার আদেশ দেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী। এর আগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৮ মার্চ কাতালগঞ্জের ডক্টরস হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযানে গিয়ে ফিনলে প্রপার্টিজ লিমিটেডের প্রকল্প পরিদর্শনে বহুতল ভবন নির্মাণ এবং ২৯ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার প্রমাণ পায় পরিবেশ অধিদফতরের টিম। এর ভিত্তিতে শুনানি করা হলে সেখানে জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয় ফিনলে প্রপার্টিজকে।

এ প্রসঙ্গে উপ পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ পেয়ে আমি ও পরিদর্শক আবুল মনসুর সেখানে অভিযান চালাই । আমাদের ছাড়পত্র ছাড়া ভবন নির্মাণ এবং অতিরিক্ত পাহাড় কাটার অপরাধে ফিনলে প্রপার্টিজকে এবার ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর আগেও তাদের একই অভিযোগে ১৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। তাই জরিমানার পাশাপাশি তাদের অবস্থানগত ছাড়পত্র বাতিল ও ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়।’

এদিকে ফিনলে প্রপার্টিজকে জরিমানার পাশাপাশি কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়। কোন ক্রমেই পশ্চিম দিকের পাহাড় কাটা যাবে না। কাটা পাহাড়ের অংশে সীমানা চিহ্নিত করে তিনটি আরসিসি পিলার স্থাপন করে অধিদপ্তরকে জানাতে হবে। সীমানার বাইরে পাহাড় কাটা যাবে না। যে পরিমাণ পাহাড় কাটা হয়েছে তার ফলে পাহাড়ধসসহ যে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার ফিনলে প্রপার্টিজকে নিতে হবে। পাহাড়ধস প্রতিরোধক দেয়াল নির্মাণের জন্য অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে। তার আগে ভবন নির্মাণের কাজ করা যাবে না।

এ বিষয়ে জানতে ফিনলে প্রপার্টিজ লিমিটেডের মহা-ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ নাসেরের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এসআর/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!