বেআইনি ঋণ নিয়ে এখন ‘আইনে’র ভয় দেখাচ্ছে এস আলম গ্রুপ, নিলাম ঠেকানোর ঘোষণা

পৌনে চার হাজার কোটি পাওনার বিপরীতে জামানত পাঁচ গুণ কম

সম্পত্তি নিলামে তোলা থেকে ঠেকাতে জনতা ব্যাংকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী সাইফুল আলম মাসুদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক পৌনে চার হাজার কোটি পাওনা রয়েছে, যার পুরোটাই খেলাপি। এস আলম গ্রুপ গণঅভ্যূত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত।

জানা গেছে, এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের কাছে জনতা ব্যাংক এক হাজার ৭৭৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা পাবে। এই ঋণের বিপরীতে ঢাকার গাজীপুর ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় দুই হাজার ৬৮৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমি বন্ধক রাখা হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুর সদরে রয়েছে ২০১ শতাংশ জমি।

ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, এ ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম ও গাজীপুরে এস আলম গ্রুপের ১৮৬০ শতাংশ জমি, যার বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৩৫৮ কোটি টাকা। এ দাম পাওনা টাকার চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ কম।

অন্যদিকে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের কাছে পাবে দুই হাজার তিন কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এই ঋণের বিপরীতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ও গাজীপুরের শ্রীপুর মিলিয়ে দুই হাজার ৯৭১ দশমিক ২৭ শতাংশ জমি বন্ধক রয়েছে ব্যাংকের কাছে। যার মধ্যে গাজীপুরে রয়েছে ২৭৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ জমি।

সবমিলিয়ে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত দুটি কোম্পানির কাছে জনতা ব্যাংকের মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৭৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বেশি।

বছরের পর বছর এই পাওনা পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালতের আইন অনুযায়ী নিলাম ডাকে চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংকের সাধারণ বীমা ভবন শাখা। এ দুটি কোম্পানির ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা সম্পত্তি বিক্রি করতে ২৩ জানুয়ারি নিলামের তারিখ রেখে ব্যাংকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

কারখানা দুটির মধ্যে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। বুধবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জনতা ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবে গ্রুপের লিগ্যাল বিভাগ।

‘কোম্পানির সম্পত্তি নিলাম সম্পর্কে সাম্প্রতিক খবরের প্রতিক্রিয়া’ সম্পর্কে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি যে এই ধরনের টেন্ডার নোটিশের কারণে আমাদের ব্যবসায় কোন প্রভাব পড়েনি। তবে উক্ত ব্যাংকের এই টেন্ডার নোটিশের জন্য, আমরা এখন উক্ত ব্যাংকের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার পথে রয়েছি। উক্ত ব্যাংকের বিরুদ্ধে আমাদের আইনি পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রয়োজন অনুযায়ী আপনাদের অবহিত করা হবে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm