বৃষ্টি যখন ‘শঙ্কা’ আর ‘আশা’ হয়ে দাঁড়ায়

বৃষ্টির শঙ্কায় চট্টগ্রাম টেস্টের বাকি দুদিন! তবে বৃষ্টি নিয়ে যতটুকু শঙ্কা কাজ করছে আফগানদের মনে ততটুকু আবার ‘আশা’ হয়ে দাঁড়াতে পারে বাংলাদেশের জন্য। যদিও আফগানিস্তানের চেয়ে টেস্টে ১১৩ ম্যাচের বড় বাংলাদেশকে বৃষ্টির আশ্রয় নিয়ে ম্যাচ বাঁচাতে হবে সেটি নিতান্তই লজ্জাকর ব্যাপার। ক্রিকেটীয় হিসেব থেকে বাংলাদেশের জয় হয়তো অসম্ভব নয়, কিন্তু প্রথম ইনিংসে আফগানিস্তানের স্পিনের সামনে যেভাবে মুখথুবড়ে পড়ে ২০৫ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ তাতে করে ধূলো উড়তে থাকা উইকেটে শেষ ইনিংসে প্রায় চারশ (তৃতীয় দিন শেষে লিড ৩৭৪) রানের পাহাড় ডিঙানো অসম্ভবই বলে দেয়া যায়। তাহলে হারের লজ্জার চেয়ে বৃষ্টি প্রার্থনার লজ্জা নিশ্চয় অনেক ভালো।

বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান দুই দলই এখন আকাশের দিকে তাকিয়ে। ম্যাচের যা পরিস্থিতি তাতে বাংলাদেশ সুর ভাজছে-‘আয় বৃষ্টি ঝেপে, ধান দেব মেপে’! আর আফগানিস্তান চিবুকে হাত দিয়ে দুশ্চিন্তা নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে অনুনয় করছে-‘যা বৃষ্টি যা!’

তাহলে চট্টগ্রাম টেস্টে কে জিতবে? আফগানিস্তান, বৃষ্টি নাকি অসম্ভবকে সম্ভব করে দিয়ে বাংলাদেশ! সেই হিসেব মেলানোর আগে চট্টগ্রামের আবহাওয়া বার্তা শুনুন আগে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলছিলেন, ‘কাল সারা দিনই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে ধারাবাহিক হবে না। আকাশে মেঘ আছে, সাগরে ৩ নম্বর সংকেত আছে। কাল বা পরশু তাই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ১০-১৫ মিনিট বৃষ্টি হয়ে মেঘ সরে যেতে পারে। আবার ২-৩ ঘণ্টা পর আবার আসতে পারে। পাশাপাশি চট্টগ্রামসহ চার সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।’

সমুদ্র বন্দরে সর্তকতা সঙ্কেত মানেই দিনভর উপকূল এবং আশপাশের এলাকায় ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির হালকা প্রভাব দেখা গেলো তৃতীয়দিন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। শেষ বিকালে বৃষ্টি এবং আলো স্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগে আম্পায়াররা বেলস তুলে নিলেন। সেই সময়ের ঘাটতি মেটাতে চতুর্থদিন সকালের খেলা শুরু হবে ৯ টা ৪০ মিনিটে।

তবে এই ম্যাচের বাকি সময় খেলা হবে কিনা-তা নিয়েও সংশয় জানাচ্ছে চট্টগ্রামের আবহাওয়া। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে-৮ ও ৯ সেপ্টেমর চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। – সেই সম্ভাবনার হার কতটুকু?

আবহাওয়া বিভাগ সেই হিসেবও স্পষ্ট করেছে-শতকরা ৮০ ভাগ সম্ভাবনা আছে বৃষ্টি হওয়ার। চট্টগ্রাম টেস্টের ফল, হার-জিত-ড্র; সব সম্ভাবনা তাহলে এখন নির্ভর করছে আকাশের মেজাজ মর্জির ওপরই!

আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে তৃতীয়দিনের খেলা শেষে আবহাওয়া বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরও দিতে হলো-‘দেখুন, আবহাওয়া নিয়ে তো আমার আর বলার কিছু নেই। তবে এটা ঠিক যে কন্ডিশন অবশ্যই বদলে যাচ্ছে। বিকালে বৃষ্টি দেখলাম। আকাশও মেঘে ছেয়ে গেছে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট যা বলছে-
উত্তর উড়িষ্যা-গাঙ্গেয় পশ্চিম বঙ্গ উপকূল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ অবস্থান করছে। এর প্রভাবে মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। চট্টগ্রামসহ দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!