বৃষ্টির কল্যাণে পঞ্চম দিনে চট্টগ্রাম টেস্ট

বাংলাদেশের হার সময়ের ব্যাপার

একমাত্র বৃষ্টিই পারে বাংলাদেশকে লজ্জা থেকে বাঁচাতে। তা না হলে বাংলাদেশের হার বলতে গেলে সময়ের ব্যাপার মাত্র। চতুর্থ দিনে বৃষ্টি বেশ কয়েকবার খেলা থামিয়েছে, তাতে করে থামেনি বাংলাদেশের হারের শঙ্কা। সকালে খেলা শুরু হতেই দুই ঘণ্টা বিলম্ব, লাঞ্চের পর আবারও বৃষ্টির বাগড়া। দিন শেষ হওয়ার একঘণ্টা আগে আবারও বৃষ্টি। মাঝখানে যে ৪৪.২ ওভার খেলা হলো তাতেই বাংলাদেশের প্রথমসারির ছয় ব্যাটসম্যান আউট। আপনি অবশ্য প্রথম সারির শব্দটি নিয়ে আপত্তি করতে পারেন। যেমন মোসাদ্দেক আউট হলো, সে তো আর প্রথম সারির ব্যাটসম্যান। আবার সদ্য নামা সৌম্য সরকার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ব্যাটিং লাইনআপে এরকম জগাখিচুড়ি পাকিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের।

এখন, চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের সামনে কি পরিণতি অপেক্ষা করছে, সেটি বুঝতে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হতে হবে না। লক্ষ্য ৩৯৮ রানের। এত বড় লক্ষ্য তাড়া করে কখনই জেতেনি বাংলাদেশ। জিততে হলে তাই রেকর্ডই গড়তে হবে। ব্যাটসম্যানরা যেভাবে খেলছেন, তাতে রেকর্ড তো পরের কথা। একদিন বাকি থাকতেই টেস্ট হারের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল টাইগাররা। তবে এরই মধ্যে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বৃষ্টি।দিনশেষে সংবাদ সম্মেলনে দলনায়ক সাকিবও স্বীকার করলেন বৃষ্টিই পারে তাদের বাঁচাতে।

উইকেট কাভারে আর উপরের আকাশ মেঘে ঢাকা। সোমবার টেস্টের শেষ দিন এরকমই থাকুক সেটিই হয়তো কামনা করছে বাংলাদেশ দল।
উইকেট কাভারে আর উপরের আকাশ মেঘে ঢাকা। সোমবার টেস্টের শেষ দিন এরকমই থাকুক সেটিই হয়তো কামনা করছে বাংলাদেশ দল। ছবি: চট্টগ্রাম প্রতিদিন।

বৃষ্টির কারণে চতুর্থ দিনের খেলা যখন বন্ধ হয় তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ ‍উইকেটে ১৩৫ রান। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৩৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে আছেন। সঙ্গে থাকা সৌম্য সরকার এখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি। অথচ বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা খারাপ ছিল না বাংলাদেশের। সাদমানের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে দেখেশুনেই খেলছিলেন লিটন দাস। প্রথম ১০ ওভার অনায়াসে কাটিয়ে দেয়ার পরই বিপদের শুরু টাইগারদের।

জহির খানের দারুণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন লিটন দাস। ৩০ বলে করেন ৯ রান। যদিও একই ওভারে আরেকবার আউটের হাত থেকে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করায় প্রমোশন পেয়ে ওপরে উঠে এসেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। কিন্তু এবার আর কিছু করতে পারেননি। কোন কিছু বিবেচনা না করে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে নিজের ইনিংসের যবানিকাপাত করলেন। অথচ, বাংলাদেশ দল তাকে উপরে পাঠায় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ঘরের মাঠে লম্বা ইনিংস খেলার সামর্থের কথা চিন্তা করে। কিন্তু মোসাদ্দেক চিন্তা করলেন সামনে তো টি-টুয়েন্টি, কিছু অনুশীলন করে নেয়া যাক। জহির খানের দ্বিতীয় শিকার হন ১২ রান করা মোসাদ্দেক। এরপর আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের চমক। এই লেগস্পিনারের ঘূর্ণিতে মুশফিকুর রহীম ২৩ আর মুমিনুল হক ৩ রান করে ফেরেন সাজঘরে।

সিনিয়রদের এই আসা যাওয়ার মাঝেও একটি প্রান্ত ধরে ছিলেন সাদমান ইসলাম। খেলছিলেন দেখেশুনে। তবে তরুণ এই ওপেনারও ফিরেছেন আফগান ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে। মোহাম্মদ নবীর বলটি ডিফেন্সই করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি আঘাত হানে প্যাডে। ১১৪ বলে ৪ বাউন্ডারিতে গড়া সাদমানের ৪১ রানের ধৈর্য্যশীল ইনিংসটির ইতি ঘটেছে তাতেই। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও বোকা বনেছেন ঘূর্ণিতে। ৭ রানের মাথায় রশিদ খানকে ডিফেন্স করতে গিয়ে শর্ট লেগে ইব্রাহিম জাদরানের ক্যাচ হয়েছেন তিনি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!