চট্টগ্রামের আনোয়ারার চাতরীতে নিখোঁজের ৩ দিন পর গোবরের স্তুপ থেকে উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধা ছখিনা বেগমের (৬০) খুনি ভণ্ড বৈদ্য জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ মে) রাতে উপজেলার চাতরী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘাতক জাকির হোসেন বৈদ্যকে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসলে তিনি পুলিশের কাছে খুনের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করে।
বুধবার (৬ মে) বিকালে তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার দায়ের করেছে ওই বৃদ্ধার ছেলে আজাদুল হক।
থানা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার দৌলতপুর ইউনিয়নের আমির আলী চেয়ারম্যান বাড়ির রইছ আলীর ছেলে জাকির হোসেন প্রকাশ বৈদ্য জাকির। ১০ বছর আগে এলাকায় চুরি, ডাকাতিসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে।
এরপর তিনি চট্টগ্রামে এসে বিভিন্ন জায়গায় দিন মজুরের কাজ করেন। এরই মাঝে তার সিলেটের বিবাহিত স্ত্রী মারা গেলে তার পুত্র সন্তানের কোন খবর তিনি আর রাখেননি। ৫ বছর আগে আনোয়ারা উপজেলার বন্দর কমিউনিটি কাফকো সেন্টারে রাজমিস্ত্রীর হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করে জাকির। এরই সাথে ঝাঁড়ফুকের কাজ দিয়ে বৈদ্য হিসেবে পরিচিতি লাভের চেষ্টা চালায়।
জাকিরের সঙ্গে স্থানীয় এক গার্মেন্টসকর্মীর সম্পর্ক গড়ে উঠলে তাকে বিয়ে করে ২ বছর ধরে ছখিনা বেগমের বোনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। ওখানে তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে। ভাড়া বাসায় থাকার সুবাদে ছখিনা বেগমের পরিবারের সাথে জাকির হোসেনের চেনা-জানার সম্পর্ক গড়ে উঠে।
ঘাতক জাকিরের অভিযোগ, ছখিনা বেগম তার স্ত্রী ও তার নামে পাড়া মহল্লায় দুর্নাম রটাতেন। এই কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে ছখিনা বেগমকে মেরে ফেলেছে সে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ বলেন, পুলিশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে জাকির একাদিক অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। গত ২৫ এপ্রিল ছকিনা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করার পর ঘটনার সার্বিক বিবেচনায় সন্দেহ তৈরি হলে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়। পরে জাকিরের গতিবিধি আরও সন্দেহ হলে মঙ্গলবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর সে পুরো ঘটনা স্বীকার করতে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, জাকিরের তথ্যমতে সে ছখিনা বেগমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে পার্শবর্তী নির্জন এলাকা গোবরের স্তুপে ফেলে দিয়ে আসে। হত্যার পর তার কানের দুলগুলো নিয়ে চাতরী চৌমুহনী বাজারের এক দোকানে বিক্রি করে দেয়। পুলিশ তাও উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য, ২৫ এপ্রিল উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের দক্ষিণ চাতরী এলাকার বাসিন্দা বদুতালুকদারের বাড়ির মোহাম্মদ নুরুচ্ছাফর স্ত্রী ছখিনা বেগম নিখোঁজের তিনদিন পর বাড়ির পাশে গরুর খামারের গোবরের স্তুপ থেকে তার লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এএইচ