বীরপ্রতীক মেজর শওকত আলী আর নেই

মহান মুক্তিযুদ্ধের অকুতোভয় যোদ্ধা মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) শওকত আলী বীরপ্রতীক আর নেই।

শনিবার (৪ জুলাই) চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। কিছুদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস ও বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য শওকত আলীকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে। শওকত আলীর বাড়ি নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামে। তবে সেখানে তিনি থাকতেন না। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদেই তিনি বসবাস করতেন পরিবার নিয়ে। তাঁর বাবার নাম এম আশরাফ আলী, মা শিরীন আরা বেগম এবং স্ত্রী নাসিমা বেগম। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে।

তাঁর ছেলে ইমরান মোরশেদ আলীর বরাতে সাবেক সাংসদ মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মেজর শওকত আলীর গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলায়। কিন্তু তাঁর অন্তিম ইচ্ছে ছিল খাজা গরীবউল্লাহ শাহ দরগাহ প্রাঙ্গণে তাকে সমাহিত করা। আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

জানা গেছে, রোববার (৫ জুলাই) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম সেনানিবাসে প্রথম তাঁর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হবে। সেখানে সেনাপ্রধানসহ তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হবে। জোহরের নামাজের পর গরীবউল্লাহ শাহ মাজার প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীরপ্রতীক মেজর শওকত আলী প্রথমে স্টুডেন্ট হিসেবে কাজ করেন অষ্টম বেঙ্গল রেজিমেন্টে। মে মাসে রিক্রুট হন সেনাবাহিনীতে। এরপর আর্মির বেসিক ট্রেনিং চলে সাড়ে চার মাস, ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে। ১২ অক্টোবর ১৯৭১ প্রশিক্ষণ শেষে ১ নম্বর সেক্টরের মনুঘাট সাবসেক্টরে মুক্তিবাহিনীর একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে যোগ দেন। ফটিকছড়িতে এক যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক অফিসারসহ বিপুলসংখ্যক সেনা তাঁদের হাতে নিহত হয়। পরে হেঁয়াকো-নাজিরহাটে তাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে কিছু এলাকা মুক্ত করে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। আর্মি নম্বর ছিল বিএসএস ৭২৮।

শওকত আলী যুদ্ধ করেছেন এক নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন এলাকায়। ফেনী নদীর নিকটবর্তী এলাকায় অপারেশনের সময় পাকিস্তানি সেনাদের শেল এসে পরে তাঁর সামনে। ফলে একটি স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয় তার ডান পায়ের গোড়ালির নিচে। পরে গৌহাটি বেইজ হাসপাতালে অপারেশন করে তা বের করে আনা হয়।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm