বিয়ের নাটক বানিয়ে যুবলীগ নেতার ধর্ষণ দিনের পর দিন, কিশোরীকে বিয়ে

রাঙামাটি জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদকের কাণ্ড

হুজুর ডেকে দুই বন্ধুকে সাক্ষী রেখে কাবিননামা ছাড়া ৩৫ বছর বয়সী এক নারীকে বিয়ে করেন রাঙামাটি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল (৪৫)। এরপর থেকে ওই নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুললেও স্ত্রী হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দেননি, তুলে নেননি নিজের বাড়িতেও। এর ভেতরে পারিবারিকভাবে বিয়েও করেছেন ১৪ বছরের এক কিশোরীকে।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাঙামাটি কোতোয়ালী থানায় ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে মামলাটি (নং-১২) দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৯ (১) এর ৩০ ধারায় মামলায় ধর্ষণ ও সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামি হলেন মো. বদরুল ইসলাম (২৫) ও মো. রবিউল ইসলাম (৫০)।

মো. নুর মোহাম্মদ কাজল বর্তমানে রাঙামাটি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘মামলার ১ নম্বর আসামি নুর মোহাম্মদ কাজল ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ে করবেন বলে প্রলোভন দেখিয়ে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট প্রতারণার মাধ্যমে দুপুর আড়াইটায় মামলার অন্য দুই আসামি বদরুল ইসলাম ও রবিউল ইসলামের সহযোগিতায় জেলা শহরের কাঠালতলী এলাকায় কাজলের ঠিকাদারি অফিসে সিএনজিযোগে ভুক্তভোগী নারীকে নিয়ে যান। এ সময় অফিসে একজন হুজুর ডেকে আনা হয় এবং ‘বিয়ে’ পড়া হয়। ভুক্তভোগী নারী কাবিননামায় স্বাক্ষর করতে চাইলে বদরুল ও রবিউল তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরবর্তী সময়েও ওই নারী বারবার কাবিননামায় স্বাক্ষরের জন্য চাপ দিলে বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যান কাজল।

এজাহারে আরও বলা হয়, বিয়ের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণে একপর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী ওই নারী। ২০২১ সালের ১ আগস্ট ওই নারী অন্তস্বত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়টি কাজলকে জানালে কাজল তাকে স্বীকৃতি দিতে পারবেন না বলে জানান এবং বর্তমানে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। যুবলীগ নেতা কাজল ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে ঋণ বাবদ ১৫ লাখ টাকা নিয়ে চেক প্রদান করেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

তবে এসব বিষয়ের জানার জন্য মামলার মূল আসামি মো. নুর মোহাম্মদ কাজলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাঙামাটি কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘নূর মোহাম্মদ কাজলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার তদন্ত কাজ শুরু করেছি।’

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!