চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা ঢেকে গেছে বিজ্ঞাপনের ব্যানার ও বিলবোর্ডের অরণ্যে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই বসেছে অবৈধ এসব বিলবোর্ড।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিজ্ঞাপনী এজেন্সিগুলো কোনো অনুমতি ছাড়াই উপজেলার মহাসড়কজুড়ে এসব বিলবোর্ড বসিয়ে সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এর মধ্যে বৈধ বিলবোর্ডের সংখ্যা কতটি তা জানা না গেলেও অবৈধ বিলবোর্ডের সংখ্যা অন্তত দুই শতাধিক হবে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কিছু রাজনৈতিক বিলবোর্ড ছাড়াও সুজুকি, বিএসআরএম, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, কেওয়াই স্টিল, সজিব কর্পোরেশনের ম্যাক্স স্টপ ফায়ার, এস আলম সিমেন্ট, ডায়মন্ট সিমেন্ট, ইএসআরএম, কেএসআরএমের বিলবোর্ড ছাড়াও ট্রাফিক পুলিশের ব্যানার ও বিলবোর্ডে পুরো মহাসড়ক ছেয়ে গেছে।
জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) জায়গায় এসব বিলবোর্ড বসানো হলেও এর নিয়ন্ত্রক কিন্তু অসাধু কিছু কর্মকর্তা আর প্রভাবশালী কতিপয় নেতা। বিলবোর্ড ভাড়া থেকে যে টাকা আসে, তার একটি অংশ ওইসব নেতা আর কর্মকর্তাদের পকেটে যায় বলে সবাই নীরব।
সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, প্রতিটি সড়কের ডিভাইডার, মোড়, বাসার ছাদ, দেয়াল ও গাছসহ বিভিন্ন স্থানে ছোটবড় বিলবোর্ড বসানো হয়েছে। এর কোনটি স্টিলের ঝালাই করা বড় বোর্ডে লাগানো আবার কোনোটি কাঠ দিয়ে তৈরি। এসবের বেশিরভাগই অনুমতি ছাড়া স্থাপন করা হয়েছে বলে সওজ সুত্রে জানা যায়। অনেক বিলবোর্ড বিদ্যুতের খুঁটির ওপর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
জানা গেছে, একটি চক্র এসব বিলবোর্ডের প্রতিটি থেকে বছরে ৩/৪ লাখ টাকা আদায় করে থাকে। এই হিসেবে শাহ আমানত তৃতীয় সেতুর দক্ষিণ পাড় থেকে শিকলবাহা ক্রসিং হয়ে ফকিরনিরহাট রাস্তার মাথা পর্যন্ত লাগানো বিলবোর্ডগুলো থেকে বছরে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে।
শিকলবাহার ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিলবোর্ডের বিষয়ে উপজেলায় আলোচনা করেছি। শিগগরই এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘বিলবোর্ড সংশ্লিষ্ট আইন কানুন নীতিমালা দেখতে হবে। পাশাপাশি মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বিলবোর্ড গুলো আমাদের নজরে এসেছে। স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানেরা চাইলে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে রাজস্ব আদায়ে পদক্ষেপ নিতে পারেন। যাতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত না হয়।’
দোহাজারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, ‘মহাসড়কে যেসব অবৈধ বিলবোর্ড সাঁটানো হয়েছে সেসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজস্ব আদায়ে ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
সিপি