বিবাহিতদের হাতেই ছাত্রদলের ‘অবিবাহিত’ কমিটি গঠনের ভার!

বিবাহিতরা ছাত্রদলের পদে আসতে পারবেন না—জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের আসন্ন কাউন্সিলে এটিই লক্ষ্য থাকলেও নতুন নেতৃত্ব যারা নির্বাচন করতে যাচ্ছেন তাদের প্রায় সকলেই বিবাহিত। সারাদেশের ১১৭ ইউনিট থেকে থাকছেন পাঁচজন করে কাউন্সিলর। চট্টগ্রাম নগর থেকেও পাঁচজন কাউন্সিলর আছেন, যাদের সবাই বিবাহিত।

১৫ জুলাই কাউন্সিল ঘোষণা করা হয়েছে। বেধে দেওয়া হয়েছে পদপ্রত্যাশীদের বয়সসীমাও। ঘোষিত নিয়ম অনুযায়ী পদপ্রত্যাশীদের ২০০০ সালের এসএসসি পাশ হতে হবে, রেজিস্ট্রেশন ১৯৯৮ সালের। বিবাহিতরা ছাত্রদলের পদপ্রার্থী হতে পারবেন না। বয়সসীমা বেধে দেওয়ায় ইতিমধ্যে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্রোহীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কার্যালয়ও অচল রাখা হয়েছিল। তবে শেষদিকে এসে বিদ্রোহীরা কিছুটা নমনীয় হয়ে শনিবার (৬ জুলাই) পর্যন্ত আন্দোলন বিরতি দিয়েছিল। এর মধ্যে সমঝোতা না হলে ঘোষিত দিনক্ষণে কাউন্সিল হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

প্রতিটি ইউনিটের প্রথম পাঁচ নেতা কাউন্সিল সদস্য, তারা দলের পরবর্তী নেতা নির্বাচনে ভোট দেবেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটির ক্ষেত্রে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ভোটার হিসেবে বিবেচিত হবেন। আহবায়ক কমিটির ক্ষেত্রে আহবায়ক, প্রথম তিনজন যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য সচিবসহ ৫ জন ভোটার হিসেবে বিবেচিত হবেন। সে হিসেবে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের প্রথম সারির পাঁচজনই বিবাহিত। তারা আবার কেউ বিএনপির মূল কমিটিতে, কেউ যুবদলে, কেউ স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্ব পালন করছেন।

ছাত্রদলের কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ বর্তমানে বিএনপির চট্টগ্রাম নগর শাখার যুগ্ম সম্পাদক। সিনিয়র সহ-সভাপতি মাঈনুদ্দিন শাহেদ নগর বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক। সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক। সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক। ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম রাশেদ খান স্বেচ্ছাসেবক দলের নগর সভাপতি।

এ বিষয়ে কথা বলতে গাজী সিরাজ উল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। রাশেদ খান এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ বেলায়েত হোসেন বুলু বলেন, আমাদের কমিটি বিলুপ্ত হয়নি এবং আমাদের পর আর কোনো কমিটি গঠন হয়নি। সে হিসেবে আমরা কাউন্সিল মেম্বার। আমরাই পারবো সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করতে। কারণ ছাত্রদল নিয়ে আমাদের আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই, নির্মোহ থেকে আমরা সঠিক নেতার হাতে নেতৃত্ব তুলে দেবো।

ছাত্রদলের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ডাকসু জিএস খায়রুল কবির খোকন। তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এ ব্যাপারে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করতে রাজি হননি বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাকসু জিএস মাহবুবের রহমান শামীম।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!